শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
মাশরাফিকে আমার প্রানঢালা অভিনন্দন। যেদিন শুনেছি তিনি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন, নির্বাচন করছেন- তখন থেকেই তার প্রতি আমার শুভকামনা ছিল। মন থেকে চেয়েছি, তিনি সংসদে আসুন। তার মতো ভালো মানুষ রাজনীতিতে দরকার। দরকার সংসদে। রাজনীতির মাঠেও তার অনেক কিছু করার আছে।
ক্রিকেটে তার অনেক বড় অবদান। বাংলাদেশ দলটাকে সম্মানজনক একটা পর্যায়ে তিনি নিয়ে গেছেন। রাজনীতিবিদ হিসেবেও তার ক্রীড়াঙ্গণকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আমার মনে হয়, শুধু আমি নই, দেশের পুরো ক্রীড়াঙ্গণ মাশরাফির জন্য শুভকামনা জানাচ্ছে। মাশরাফির জয়ে সবাই খুশি।
মাশরাফি অত্যন্ত বড় মনের একজন মানুষ, এটা সবার জানা। এলাকার উন্নয়নে তিনি আগে থেকেই কাজ করছেন। নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন। সাংসদ হওয়ার পর এখন আরও বেশি সমাজসেবামূলক কাজ করার সুযোগ পাবেন মাশরাফি।
মাশরাফি যখন রাজনীতিতে যোগ দিলেন তখন দেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালীন নির্বাচন করাকে কেউ কেউ ‘তাড়াহুড়ো’ সিদ্ধান্ত বলেছিলেন। তবে আমি মাশরাফির সিদ্ধান্ততে স্বাগত জানিয়েছিলাম। আসলে এটাই ছিল উপযুক্ত সময়, সঠিক সিদ্ধান্ত। মাশরাফি যেমন ভালো একজন মানুষ, তেমনি বুদ্ধিমানও বটে। তিনি ভেবে চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিশ্বকাপের পর তিনি ক্রিকেট থেকে সড়ে দাঁড়াবেন- এটা নিশ্চয় তার পরিকল্পনা। আর এ কারণেই তিনি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। খুবই বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। কারণ আগামী নির্বাচন পাঁচ বছর পর। তখন আরেক পরিণতি হতে পারে। এখন তার দেশজুড়ে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। ক্রিকেট ময়দানে না থাকার কারণে পাঁচ বছর পর এই জনপ্রিয়তা কমতে পারে। এখন বয়সও অনুকূলে। ৩৫ বছরে সংসদ সদস্য হওয়া বিরাট ব্যাপার। সব মিলে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত।
মাশরাফি ক্রিকেট মাঠে যেমন আদর্শ, রাজনীতিতেও তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শ হতে পারেন। আমি মনে করি, তার দেখাদেখি অনেক প্রতিভাবান তরুণ এখন রাজনীতিতে আসবে।
আশা করি, রাজনীতিতেও মাশরাফি ভালো করবেন। তার মধ্যে নেতৃত্বগুণ অসাধারণ, এটা তো সবার জানা। মানুষ হিসেবেও তিনি কতটা উদার ও পরোপকারী, সেটাও অজানা নয়। খেলার মাঠে ৬/৭ মাসের বেশি তিনি নেই। এরপর পুরো সময় রাজনীতিতে ব্যয় করতে পারবেন। এতে তার এলাকার মানুষই শুধু উপকৃত হবেন না, লাভবান হবে দেশের ক্রীড়াঙ্গণও। ক্রিকেটার হিসেবে, অধিনায়ক হিসেবে দেশকে অনেক কিছু দিয়েছেন, রাজনীতিবিদ হিসেবেও তার এখন দেওয়ার সময়।
সংসদ নির্বাচিত হয়েছেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আরোও দুজন তারকা। একজন হলেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী এবং অপরজন হলেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। তাদেরও আমার অভিনন্দন। দুর্জয় গতবারও সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। সাবেক অধিনায়ক তিনি। খেলোয়াড়ী জীবনে ক্রিকেটে দারুণ অবদান রেখেছেন। বিগত বছরগুলোতে ক্রিকেট বোর্ডে থেকেও বড় অবদান রেখেছেন। আশা করি সামনেও এই ধারা অব্যাহত রাখবেন।
সালাম মুর্শেদী এক সময়ের তুখোড় ফুটবলার। তার করা এক মৌসুমে ২৭ গোলের রেকর্ড এখনও অক্ষত। সংগঠক হিসেবেও তিনি দীর্ঘ সময় ফুটবল উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। মাঠের সফল মানুষ। ব্যবসায়ী হিসেবেও দারুণ সফল। বিজেএমসির সাবেক প্রেসিডেন্ট। বর্তমান রপ্তানীকারক সমীতির চেয়ারম্যান। আমি মনে করি, রাজনীতিবিদ হিসেবেও ক্রীড়াঙ্গণকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে তার। ফুটবল উন্নয়নে তিনি আরও বড় আবদান রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।
নাজমুল হাসান পাপনকেও আমার, অভিনন্দন, শুভকামনা। বিসিবি প্রধান হিসেবে তিনিও অনেক কিছু করেছেন ক্রিকেট উন্নয়নে। আশা করি সামনের দিনগুলোতেও তার বিচক্ষণ নেতৃত্ব অব্যাহত থাকবে।
খন্দকার জামিল উদ্দিন : বিসিবির সাবেক পরিচালক