সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই হাসপাতালের পিছনের গেট বন্ধ করে দিয়েছে উঠতি বয়সীরা। অন্য আরেক এলাকার লোকজন এসে হাসপাতালের পিছনের গেট এলাকার উঠতি বয়সীদের সাথে নিয়ে এই কাজ করেছেন। পাশাপাশি সেই পথ দিয়ে হাসপাতালে যাওয়া চিকিৎসক ও নার্সদেরও নানা ভাবে অপমানিত করছেন তারা। এছাড়াও দীর্ঘ ওই সড়কটি আটকে দেয়ায় ভিতরে পুলিশ প্রবেশ করতে না পারায় সড়ক জুড়ে মানুষের আনাগোনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কর্মকান্ডের পিছনে মেডিকেল কলেজের পিছনের গেট এলাকার কিছু মাদক সেবীও জড়িত রয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে উঠতি বয়সীরা জড় হয়ে বাঁশ বেধে গেটটি আটকে দিয়েছেন। এতে করে বিপাকে পড়েছেন শেবাচিমের ডাক্তার, নার্স, স্টাফ ও রোগীরা। বরিশাল নগরীতে বসবাসকারী শেবাচিমের ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল কর্মচারী এই গেট ব্যবহার করে আসা যাওয়া করে। পাশাপাশি বরিশাল নগরীর ৮০ ভাগ রোগী প্রবেশের জন্য এই পথই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু গেটটি বন্ধ করে দেওয়ায় কমপক্ষে ৩ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে তারপর ঢুকতে হচ্ছে মেডিকেলের সামনের গেট থেকে। এতে করে যেমন নষ্ট হবে রোগী সেবার সময়, তেমনি দ্রুত হাসপাতালে ঢুকতে না পেরে ঝুঁকিতে পরবে রোগীরা।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, আজ সকালে কমপক্ষে ১০ জন নার্স, ৪/৫জন ডাক্তার এই গেট থেকে ঢুকতে দেয়নি স্থানীয়রা। স্থানীয়রা বাধা দিয়ে তাদের ফেরৎ পাঠিয়েছেন। শেষে বাংলাবাজার, পুলিশ লাইন্স, ডিসি লেক, বান্দ রোড ঘুরে মেডিকেলের সামনের গেট থেকে প্রবেশ করেছে তারা। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকার সচেতন মহলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যারা জীবন রক্ষার জন্য কাজ করছেন তাদের এই পথ দিয়ে তো যেতে দেয়া হচ্ছেই না বরং তাদের নানা ভাবে অপমানিত করা হচ্ছে। যেটা সত্যিই নিন্দনীয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন সিনিয়র নার্স বলেন, আমিসহ কয়েকজন ওই গেট থেকে নিয়মিত যাতায়াত করি। কিন্তু আজ সকালে আমাকে ঢুকতে দেয়নি। শেষে অনেক কষ্ট করে অনেক পথ হেটে সামনের গেট থেকে ঢুকতে হয়েছে। আমার সাথে যারা গেট আটকে দিয়েছিল তারা রুঢ় আচরণ করেছেন। আরও কয়েকজন স্টাফ, নার্স ও ডাক্তারকে গেট থেকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে দেখেছেন তিনি।
হাসপাতালের আরেক নারী চিকিৎসক জানান, আমিসহ বেশ কয়েকজন ডাক্তার পিছনের গেট সংলগ্ন বাসা ভাড়া করে থাকি। কিন্তু আমাকেও আজ ওই গেট থেকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এতে করে আমিও যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছি, তেমনি রোগীদের সেবা দিতেও সময়ক্ষেপন হচ্ছে। তিনি মনে করেন, লকডাউন মানে কোন সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা নয়। হাসপাতালের গেট যদি বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে ডাক্তার যাবে কােথা থেকে।
এ বিষয়ে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হােসেন বলেন, বিষয়টি আমি কিছুক্ষণ আগে জেনেছি। সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। কেন, কারা করলো তাও জানা হচ্ছে। তিনি বলেন, হাসপাতালেতো করোনা আক্রান্ত রোগী আছে। ছাত্র হোস্টেলের কেউ আক্রান্ত শুনে গেট আটকানো উচিত না।