রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:০২ পূর্বাহ্ন
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মৃত্যু হওয়া জাকির হোসেনসহ চিকিৎসাধীন ৫জনের কেউই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি।
এমনকি ওই ইউনিট থেকে সুস্থ্য হয়ে যারা চিকিৎসা নিয়ে গেছেন তারাও করোনায় আক্রান্ত হন নি।
আজ শনিবার ঢাকার আইইডিসিআর থেকে আসা ৬জনের পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা ভাইরাস নেগেটিভ এসেছে।
দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পারিচালক ডাঃ মো. বাকির হোসেন।
জানাগেছে, শের-ই বাংলার করোনা ওয়ার্ডে করোনা সন্দেহে প্রথম রোগী ভর্তি হয় গত ১৭ মার্চ বিকেলে। ওইদিন চট্টগ্রামের কভার্ডভ্যান চালক ভোলার চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের মো. রাসেল মোল্লা (২৫) জ্বর, সর্দি-কাঁশি আর গলাব্যাথা নিয়ে ভর্তি হন তিনি। প্রচলিত চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ১৯ মার্চ ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি চলে যান তিনি।
২দিন পর ১৯ মার্চ একই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের ভাষানচরের বাসিন্দা ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টের শ্রমিক মো. শহিদুল জোমাদ্দার (২৪)। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ২১ মার্চ তিনিও বাড়ি ফিরে যান।
এরপর একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ২৩ মার্চ বরিশালের বানারীপাড়ার কলেজছাত্র স্বপন হাওলাদার (২৭) ও নগরীর বাজার রোডের মো. শাওন (২৩), ২৪ মার্চ পটুয়াখালীর বাউফলের নিমদি গ্রামের মো. নোমান (২৫), ২৫ মার্চ বরিশাল সদরের চাঁদকাঠী এলাকার বিথি আক্তার (২৬) এবং একই জেলার আগৈলঝাড়ার তৃষ্ণা (৪৫) ভর্তি হন।
২৮ মার্চ বিকেলে ভর্তির পরদিন ২৯ মার্চ সকাল ৭টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় পটুয়াখালী সদরের বহালগাছিয়া এলাকার মো. জাকির হোসেন (৪০)।
সবশেষ গত শুক্রবার বিকেলে করোনা সন্দেহে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয় জেলার মেহেন্দিগঞ্জের আন্দারমানিক গ্রামের মো. সবুজ (২৮)।
এদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিসায় সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া প্রথম ২জনের নমুনা পাঠানো হয়নি ঢাকার আইইডিসিআর-এ।
এছাড়া শুক্রবার করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া সবুজ ছাড়া এখানে মৃত্যু হওয়া একজন এবং চিকিৎসাধীনসহ মোট ৬জনের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছিলো ঢাকার আইইডিসিআর-এ।
আজ আইইডিসিআর থেকে পাঠানো ৬জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। অর্থাৎ করোনা সন্দেহে মারা যাওয়া একজন এবং চিকিৎসা নেয়া আরও ৫ জনের কেউ-ই করোনায় আক্রান্ত নয়।
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর যে তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত নয়। এই খবর জনগনের উদ্বেগ-উৎকন্ঠা অনেকটা দূর করবে। তবে করোনা সংক্রামন এড়াতে সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করা সহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন।
এদিকে জ্বর-সর্দি-কাঁশি নিয়ে করোনা সন্দেহে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসায় সুস্থ হয়েও বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না ৩জন রোগী। বলতে গেলে ওই ওয়ার্ডেই অনেকটা কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তারা।
আইইডিসিআর এর নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরপরই তারা বাড়ি ফিরে যান বলে জানিয়েছেন হাসপাতালে দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. নাজমুল হুদা।
সব শেষ শুক্রবার জ্বর-সর্দি-কাশী নিয়ে ভর্তি হওয়া সবুজ এখন করোনা ওয়ার্ডের একমাত্র রোগী।
অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলার গৌরনদীর মাহিলাড়া জ্বর, ডায়রিয়া ও গলাব্যাথায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর করোনা সন্দেহ করায় হাসান ফকিরের (৪৫) রক্তের নমূনা সংগ্রহ করে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. সাইয়্যেদ আমরুল্লাহ।