বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ৫ম ব্যাচের ছাত্রী জান্নাতুল নওরীন উর্মিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় তার পিতা বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
নির্যাতনের ৯দিন পর উর্মির বাবা অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান মৃধা বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের এক প্রভাষক ও ৫ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে সোমবার (০৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে মেট্রোপলিটনের বন্দর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার কখা স্বীকার করে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন।
অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, গত পহেলা মার্চ বিকেলে একাডেমিক ভবনের একটি কক্ষে গনিত বিভাগের একটি বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই তার মেয়ে উর্মির উত্তরপত্র জোর করে টেনে নিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেন প্রভাষক সুজিত কুমার বালা। হল থেকে বেড়িয়ে সিড়ি বেয়ে নামার সময় সুজিত কুমারের যোগসাজসে মাস্ক পরিহিত আলিম সালেহীন, আরিফুল ইসলাম, আবদল্লাহ ফিরোজ, মো. হাফিজ এবং আসাদুজ্জামান সহ অন্যান্যরা উর্মির উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা তার মুখে কাপড় গুজে দিয়ে তার হাতে থাকা জ্যামিতি বক্সের সুচালো কাটা দিয়ে তার বুকে, পিঠে এবং নিতম্বে খুঁচিয়ে আহত করে। তারা তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। তার তলপেটে, কোমড়ে এবং উরুতে আঘাত করে। একজন তার ঘাড়ে কামড় দেয়।
গুরুতর জখম অবস্থায় বাসায় ফিরে যায় সে। নিরাপত্তাহীনতার কারনে ওইদিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। এরপর তার অবস্থার অবনতি হলে ৪ মার্চ শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয় তাকে। পরদিন ৫ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয় তাকে।
এ অবস্থার প্রতিকার ও বিচার চেয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ৯ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী উর্মির বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উর্মির ভাই মেহেদী হাসান সোহেল জানান, দুই দিন ধরে তার বাবা অভিযোগ নিয়ে বন্দর থানায় ঘুরছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা নারী নির্যাতনের ধারা বাদ দিতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু তার বাবা অভিযোগে অটল থাকলে পুলিশ অভিযোগ গ্রহন করে। তবে সার্ভারে সমস্যার কারন দেখিয়ে পুলিশ মামলা রুজু করতে সময়ক্ষেপন করছে।
এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দিন সাব্বির উর্মির বাবার কাছে প্রভাষক সুজিত কুমার বালাকে এ মামলায় আসামী না করার অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন উর্মির বড় বোন ফাতেমা তুজ-জোহরা মিতু। তবে মহিউদ্দিন সাব্বির এই অভিযোগ অস্বীকার করে তদন্ত কাজে উর্মির পরিবারকে সহযোগীতার অনুরোধ করেছেন বলে জানান।