শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
শফিকুল ইসলাম: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গত ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হল । গত ১১ জানুয়ারি প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও দুই দফা পিছিয়ে ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় তা প্রকাশ করা হয়।
ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিষয় ভিত্তিক প্রথম মেধা তালিকায় প্রকাশ নিয়ে দেখা গেছে ভৌতিক কাণ্ড।
এসময় অনেক পরীক্ষার্থী অনলাইনে চেক করে বিষয় পেয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়ে ভর্তি হতে এসে জানতে পান তিনি কোন বিষয়ই পায়নি।
খ ইউনিটে ১৭৫ তম মেধাক্রম আমিনুল ইমলামের মনোনীত বিষয় এসেছে বাংলা কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পরের দিন পুনরায় অনলাইনে দেখতে পান তার মনোনীত বিষয় বাতিল করে নো ডিপার্টমেন্ট প্রদর্শন করা হয়েছে।
ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে গ ইউনিটে মার্কেটিং বিভাগ মনোনীত করা পরীক্ষার্থী ৭২৯ তম রাইয়ান আহসান ও খ ইউনিটে ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগ মনোনীত হওয়া ৩৪১ তম মেধাক্রমের রেদওয়ান হাসানের বেলায়ও।
বিষয় মনোনয়নের দিন রাত সাড়ে ১০ টায় খ ইউনিটে ৩৪১ তম রেদওয়ান হাসান জানতে পান তার মনোনীত বিষয় ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগ। পরের দিন সকালে ববিতে ভর্তি হওয়ার জন্য বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ভর্তি বাতিল করেন। এরপর ববিতে ভর্তি হতে এসে জানতে পান তিনি কোন বিষয়ের জন্য মনোনীত হননি।
অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চান্স পেয়েও ভর্তি বাতিল করেছেন। আবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও তারা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষাজীবন নিয়ে টানাপোড়েনে পড়তে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের।
এদিকে ইংরেজিতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় যেকোন একটিতে ‘সি’ গ্রেট থাকায় বিভিন্ন বিষয়ের জন্য মনোনীত হয়েও ভর্তি হতে পারছেন না অনেক শিক্ষার্থী। কেননা ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে ‘খ’ ইউনিটের যেকোন বিষয় পেতে হলে শিক্ষার্থীকে ইংরেজিতে ন্যূনতম বি গ্রেট পেতে হবে।
কুমিল্লা থেকে আসা পিয়াস সরকারের মেধাক্রম ২৪৭। বিষয়ে এসেছে ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগ। মঙ্গলবার ভর্তি হতে এসে জানতে পারেন তিনি ভর্তি হতে পারবেন না। তিনি বলেন, ইংরেজিতে সি গ্রেট থাকায় যদি ভর্তি হতে না দেয়া হয় তাহলে আমাকে সাবজেক্ট দেয়া হল কেন? বিষয়ই যদি না দেয় তাহলে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রাখল কেন?
একই রকম ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে ভর্তি বাতিল করে ববিতে ভর্তি হতে আসা আরেক শিক্ষার্থীর সাথে। ‘খ’ ইউনিটে ১৭৫তম হওয়া ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি বাতিল করে ভর্তি হতে এসেছি। এখন আমার শিক্ষাজীবনের কি হবে?
জানা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার ব্যবহার করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। সার্ভার অপারেটর সঠিক সময়ে কাজ না করায় এমন বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক রাহাত হোসেন ফয়সাল বলেন, কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে প্রাথমিকভাবে ফলাফল প্রকাশে দেরি হয়েছে। প্রাথমিক ফলাফলে এ জন্য কিছুটা অসঙ্গতিও সৃষ্টি হয়েছে। যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি বাতিল করে এখানে ভর্তি হতে এসেছিল কিন্তু ইংরেজিতে সি গ্রেট থাকায় ভর্তি হতে পারছেন না। তারা যেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পুনরায় ভর্তি হতে পারেন সে ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
তিনি আরো বলেন, অনেকের মেধাক্রম কম থাকলেও তারা বিষয় পায়নি। কেননা বিষয় পেতে যে শর্তগুলো রয়েছে তারা সে শর্তগুলো পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু অনেকের মেধাক্রম অনেক দূরে থাকা সত্ত্বেও বিষয় পেয়েছেন। কেননা তারা সবগুলো শর্ত পূরণ করতে পেরেছেন। যেমন, সি ইউনিট ( ব্যবসায় অনুষদ) এর মেধাতালিকার প্রথম ১৫০ জনের ৩৫ জন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ের জন্য মনোনীত হয়নি। কেননা ঐ ইউনিটের সাবজেক্ট পেতে ন্যূনতম যে শর্তগুলো রয়েছে তা তারা পূরণ করতে পারেননি। আবার এক হাজার ১৩১তম মেধাক্রম থেকেও সাবজেক্ট পেয়েছেন। কেননা তারা ভর্তি বিজ্ঞপ্তির সবগুলো শর্তগুলো পূরণ করেছেন।