শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন
পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ও যানজটবহুল এলাকায় ব্যাটারি চালিত রিক্সা এবং হলুদ ইজিবাইক চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) সকাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ফলে নগরে যানজট কিছুটা কমলেও যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে সময়ের সাথে সাথে বৈধ গাড়ির সংখ্যা বাড়লে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। বরিশাল বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সূত্রে জানাগেছে, প্রথম ধাপে আজ ১ অক্টোবর থেকে নগরের জিলা স্কুল মোড় থেকে জেলখানা মোড় পর্যন্ত, কাকলীর মোড় থেকে সিটি করপোরেশনের মোড় হয়ে সেটেলমেন্ট অফিস মোড় পর্যন্ত, ডাচবাংলা ব্যাংকের মোড় থেকে গির্জামহল্লা হয়ে ফলপট্টির মোড়, ভাটারখাল ক্রসিং থেকে ডিসি অফিস গেট, সিটি করপোরেশনের মোড় ও ফলপট্টির মোড় হয়ে চকের পুল পর্যন্ত উচ্চ আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও হলুদ ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরফলে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ অন্যান্য থ্রি-হুইলার বা গন পরিবহন ক্ষ্যাত প্যাডেল রিক্সা, মাহিন্দ্রা ও সিএনজিতে করে সদররোড, চক বাজার, ফলপট্টি, ফজলুল হক এ্যাভিনিউ, গীর্জমহল্লা, আদালত পাড়া, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও নগর ভবনে আসছেন। তবে এ পরিবহনের কিছুটা সংকট থাকায় অনেকে হলুদ ইজিবাইকে করে জিলা স্কুলের মোড়, জেলখানার মোড়, নদী বন্দর সড়কসহ নিষেধাজ্ঞা এলাকা শুরু হওয়া পয়েন্টগুলোতে এসে নামছেন। এরপর পায়ে হেটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে প্রধান শহর অর্থাৎ সদরররোড এলাকায় হলুদ ইজিবাইক চলাচল বন্ধ হওয়ায় যানজট কমে যাওয়ায় খুশি হয়েছেন ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ অবৈধ এসব যানবাহন যে পরিমানে চলছে, তাতে নগরের প্রধান বানিজ্যিক এলাকায় যানজট লেগেই থাকতো। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ খায়রুল আলম বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহের যানজট নিরসন এবং সর্বসাধারনের চলাচল নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ সড়ক গঠনের লক্ষে উচ্চ আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও হলুদ ইজিবাই চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে নগরের প্রাণকেন্দ্র ঘিরে বেশ কয়েকটি সড়কে আগামী ১ অক্টোবর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মেট্রোপলিটন এলাকার সড়কে এ যানবাহনগুলো চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে। আর জনগনের ভোগান্তি লাঘবে পর্যায়ক্রমে বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য বরিশাল সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স নিয়ে নগরে ২ হাজার ৬১০ টি ব্যাটারি চালিত হলুদ ইজিবাইক (অটোরিক্সা) চলাচল করে। তবে বাস্তবে নগরে চলাচলরত অটোরিক্সার সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশি। এছাড়া প্যাডেল চালিত রিক্সার চলাচলের অনুমতি থাকলেও, সেই রিক্সার লাইসেন্স লাগিয়ে নগরে চলাচল করছে হাজারের মতো ব্যাটারি চালিত রিক্সা। যে রিক্সার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। আর বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিক্সার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ না করলে আগামীকাল ২ অক্টোবর বুধবার থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছেন শ্রমিকরা। বরিশাল মহানগর রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক সুশান্ত সুকুল জানান, গত ১৯ শে আগস্ট থেকে কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বরিশাল শহরে দফায় দফায় ব্যাটারিচালিত রিক্সা উচ্ছেদের নামে নির্মম প্রশাসনিক অভিযান চলছে। প্রায় দুই মাসব্যাপী এই অভিযানে এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিক্সা আটক করা হয়েছে এবং প্রায় প্রতিটি গাড়ির ব্যাটারি-মটর খুলে রাখা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি দরিদ্র রিক্সাচালকরা শিকার হয়েছে নানাবিধ আর্থিক হয়রানি ও নির্যাতনের।