বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩০ অপরাহ্ন
মোয়াজ্জেম হোসেন, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধিঃ
গঙ্গাস্নান বা পূন্যস্নানের মধ্যদিয়ে পটুয়াখালী কুয়াকাটায় শেষ হয়েছে রাসপূজা। বুধবার(০৫ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫ টায় জাগতিক সকল পাপ মোচনের আশায় এ গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেন হিন্দুধর্মালম্বীরা।
এর আগে মোমবাতি, আগরবাতি, ফুল, দুর্বা, হরতকি, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্রের জলে অপর্ন করে সনাতনী নারীরা। এসময় লক্ষাধিক নারী পুরুষের উপস্থিতি এবং উলুধ্বনি ও মন্ত্রপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত এলাকা।
অনেকে প্রায়ঃশ্চিত ও পিন্ডদানের পাশাপাশি মাথা ন্যাড়া করেন। পরে সৈকত সংলগ্ন শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রি সেবাশ্রমে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা দর্শন করেন ভক্তরা।
রাসপূজা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দিরে ৫ দিনব্যাপী চলবে রাসমেলা। আগত পূন্যার্থীদের নিরাপত্তায় মাঠে ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ট্যুরিষ্ট পুলিশ সদস্যদের ব্যাপক তৎপরতা ছিলো।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কলাপাড়ার মদনমোহন তীর্থযাত্রি সেবাশ্রম মন্দির ও সাগরকন্যা কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে অধিবাস, ভগবানকে আমন্ত্রন, মঙ্গলঘট স্থাপন ও সন্ধ্যা আড়তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় হাজার হাজার পূন্যার্থীর উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠে মন্দিরসহ কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকা।
রাতভর কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে চলে ভাগবত পাঠ, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও মহানাম কীর্তন। এ অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দেশের নামকরা বেশ কয়েকজন শিল্পী।
অনুষ্ঠানে পটুয়াখালী এবং কলাপাড়া বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় বসে সহস্রাধিক পন্য সামগ্রীর দোকান। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন ছিল সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।
কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নানে আসা খুলনার পর্যটক দম্পতি শুভ্রা ও রবিন বলেন, এর আগেও অনেকবার গঙ্গা স্নানে এসেছি কিন্তু এবারের অভিজ্ঞতা একটু ব্যতিক্রমধর্মী। এ যেন রাখো সনাতনীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

কলাপাড়া রাস উদযাপন কমিটির সদস্য দেবাশীষ কালা বলেন, অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে সর্বাধিক উপস্থিতি ও আনন্দঘন পরিবেশে এবারের রাস মেলা উদযাপন হচ্ছে।
কুয়াকাটা রাধাগোবিন্দ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের তত্ত্বাবধায়ক নীহার রঞ্জন সরকার বলেন, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই এখানে লাখো পুণ্যার্থীদের উপস্থিতিতে মন্দির প্রাঙ্গন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
রাতভর বিভিন্ন অনুষ্ঠান শেষে সকালে উন্নতিরা গঙ্গা স্নান করে বাড়ি ফিরে যান।কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাউছার হামিদ বলেন,রাস মেলা উদযাপন উপলক্ষে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার ছিল।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আনন্দঘন পরিবেশে এই অনুষ্ঠান উদযাপন করতে পেরেছেন পূন্যার্থীরা।
মোয়াজ্জেম হোসেন কলাপাড়া