সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসব ২০২৫: টেকসই ভবিষ্যতের প্রত্যয়ে আয়োজন পটুয়াখালীতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানববন্ধন ও স্মারক লিপি প্রদান বাউফলে মায়ের সাথে খেলতে গিয়ে ছিটকে পড়ে শিশুর মৃত্যু কুয়াকাটায় চলছে ৩দিন ব্যাপী রাখাইনদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব সিদ্দিক সভাপতি, মিজান সম্পাদক। মহিপুর থানা যুবদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত গৃহবধূ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে কুয়াকাটায় মানববন্ধন গৌরনদীতে চোর সন্ধেহে গনপিটুনিতে আহত যুবকের দুইদিন পর মৃত্যু কুয়াকাটায় আগুনে পোঁড়া বন পরিদর্শন কলাপাড়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলে সহায়তার দায়ে দুই শিক্ষককে অব্যাহতি সড়ক সংস্কারের দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল বাড়িতে ছাগল ঢোকাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর সংঘর্ষ, আহত-৪ বরিশালে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ বরিশালের জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে উৎস করের নির্ধারিত ফি কম নিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রেশন করার প্রমান পেয়েছে দুদক কলাপাড়ায় কৃষকদের অবস্থান ধর্মঘট ও স্মারকলিপি প্রদান কলাপাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিএনপি কার্যালয়সহ ৫টি দোকান ভস্মীভূত
সপ্তাহ ব্যবধানে বেগুনের দাম দ্বিগুণ

সপ্তাহ ব্যবধানে বেগুনের দাম দ্বিগুণ

Sharing is caring!

ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: রমজানের তৃতীয় সপ্তাহে এসে বাজারে উত্তাপ বাড়াচ্ছে বেগুণ, আদা ও রসুন। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি বেগুনের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া বেগুণ এ সপ্তাহে এসে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আদা ও রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে। 

বেগুণের দাম দ্বিগুণ হলেও কমেছে মুরগির মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া বাজারের বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, চিনি, মাছ, গরু ও খাসির মাংস। 

অপরিবর্তীত রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় মুদিপণ্যের দাম। তবে রাজধানীর বাজারসহ অলি গলির দোকানগুলোতে এখনও বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ৫২ পণ্য। এসব পণ্য দোকানের সামনে রেখে বিক্রি করতে দেখা যায়নি।

এদিকে হঠাৎ পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রতারা অভিযোগ করে বলেন, হঠাৎ বাজারে কি এমন ঘটলো যে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুণের দাম দ্বিগুণ হলো। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে তাহলে কী লাভ হলো? এক সপ্তাহে একটি পণ্যের দাম কমলে দাম বাড়ে কয়েকটি পণ্যের। আমরা এমন দাম চাই না। আমরা চাই স্থিতিশীল ও সুষ্ঠ একটি বাজার ব্যবস্থাপনা, যেখানে ক্রেতা বিক্রেতা ও কৃষক সবাই লাভবান হবে। বর্তমানে বাজারের যে অবস্থা ঈদের আগে আবার সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা ক্রেতাদের।

মঙ্গলবার (২১ মে) রাজধানীর শ্যামবাজার, সুত্রাপুর, দয়াগঞ্জ, রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার, সেগুনবাগিচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও মানভেদে ভালোমানের প্রতি কেজি বেগুণ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি বেগুনের দাম ৪০ টাকা বেড়েছে। আর আদা ও রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ১২০ টাকা দরে। 

তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম, কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে। এছাড়া লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। পাশাপাশি প্রতি পিস কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা। দেশি মুরগির দামও ৩০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। বর্তমানে প্রতি পিস দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। 

গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আমদানি করা ভারতিয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে।

এদিকে গত সপ্তাহের দামেই বিক্র হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। বেগুন বাদে সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। মান ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি আলু ২০ টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বরবটি ৫০, কাঁকরোল ৫০ টাকা,  ধুনদুল ৫০ টাকা। এছাড়া ঝিঙা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, লেবু হালি মান ভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে।

এছাড়া সজনে ডাটা ৫০ টাকা কেজি,  লাউ প্রতি পিস ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ১০ থেকে ২০ টাকা, পুঁই শাক ও ডাটা শাক ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি ব্যবসায়ী বলরাম শাহা বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ মোকামে বেগুনের আমদানি কমে গেছে। কারণ, কয়েক তিন আগের ঝড়ে বেগুন ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সবজিটির দাম বেড়েছে। তবে অন্যান্য সব ধরনের সবজির দাম কম আছে। কোনো রকমের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দাম আরো কমে যাবে।

এদিকে বাজারগুলোতে নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী দেশি গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা এবং বিদেশি বা বোল্ডার গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা ও মহিষের মাংস কেজি প্রতি ৪৮০ টাকায় বিক্রির জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগীর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা ধরে বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা রমজান থেকে ২৬ রমজান পর্যন্ত মাংসের এ দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সকালে অভিযানের ভয়ে এ দামে বিক্রি হলেও বিকেলে ২০ থেকে ৭৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

মাংস ব্যবসায়ী ইয়াকুব বলেন, বাজারে কোনো মাংসের দাম বাড়েনি। বরং কমেছে মুরগির মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। এছাড়া দেশি ও কক মুরগির দাম কমেছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে।

আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮ নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাও চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। প্রতি কেজি খোলা আটা ২৭ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, খোলা ময়দা ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেসারি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বুট ৩৮ থেকে ৪০ টাকা।

টানা দুই সপ্তাহ দাম কমার পর ডিমের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ টাকায়। মুদি দোকানে ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৭-৮ টাকায়।

ডিমের পাশাপাশি অপরিবর্তীত বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম। রুই কাতলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০, আইড় ৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০, বেলে মাছ প্রকার ভেদে ৭০০ টাকা, বাইন মাছ ৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পুঁটি ২৫০ টাকা, পোয়া ৬০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, পাবদা  ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।

মাছ ব্যবসায়ী সুমন পোদ্দার  বলেন, কয়েক মাস ধরেই মাছের দাম চড়া। এবার মাছের দাম সহসা কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। কারণ এবার বৃষ্টি খুব একটা হয়নি। যদি বৃষ্টি অথবা বন্যা হয় তাহলে হয়তো মাছের দাম কিছুটা কমতে পারে। আর এ মৌসুমে সবসময়ই মাছের দাম চড়া থাকে।

পবিত্র রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল খুলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দেশের যেকোন স্থানের মূল্য বৃদ্ধির তথ্য সেলকে প্রদানের জন্য ৯৫৪৯১৩৩, ০১৭১২-১৬৮৯১৭, ৯৫১৫৩৪৪ ও ০১৯৮৭-৭৮৭২০৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাভুক্ত বাজারগুলোতে বসানো হবে ডিজিটাল মূল্য তালিকার বোর্ড।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD