বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০১:৩২ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলাধীন সাগরকন্যাখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। যেখানে আসলে সাগরের নীল জলরাশি আর ডেউয়ের গর্জন পর্যটকদের মন কেড়ে নেয় প্রতিটি মুহুর্তে। গত দুই দশকের বেশী সময়ে এখানে আগমন ঘটে দেশী বিদেশি হাজারো পর্যটকের। কিন্তু এখানে আসতে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভাঙ্গা সড়ক আর একাধিক সেতু পার করে কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের জন্য ছিল নানারকম বিড়ম্বনা। পদ্না সেতু চালু হলে ঘুরে দাড়াতে শুরু করবে স্থবির হয়ে থাকা নামি-দামি বিনিয়োগ কারীদের স্থাপত্য। যা পর্যটকদের সেবার মান বাড়াবে আগের থেকে কয়েকগুণ। অবসান ঘটবে কুয়াকাটায় পৌছানোর সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা এমনটাই প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক দম্পতি সুমাইয়া-নিরব জানান, কুয়াকাটায় ভ্রমনের জন্য সবসময়ই মনটা প্রস্তুত থাকে। তবে পদ্না সেতু তাদের মুল প্রতিবন্ধকতা হিসাবে কাজ করতো। এবার তাঁদের আর কোন বাঁধা থাকবে না।
কুয়াকাটা ট্যুর গাইড এসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু জানান, ইতোমধ্যে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। যে পদ্না সেতু উদ্বোধন হলে বর্তমানের থেকে কয়েকগুণ বেশি পর্যটক কুয়াকাটায় আসবে। সেজন্য আমরা ট্যুর গাইডদের পরিধি বাড়াচ্ছি। তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি, সৈকতের সৌন্দর্যকে আরও বাড়ানোর চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছি।
জল তরুনী ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, পদ্না সেতু এই সৈকতকে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে দিবে। ইকো-ট্যুরিজমের প্রসার বাড়বে সাথে সারাবছর পর্যটকে মুখর থাকবে কুয়াকাটা।
কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্টের জেনারেল ম্যানেজার মো.নাসিমুল আযিম জানান, বেশ কয়েকবছর আমরা নির্দিষ্ট একটি সংখ্যায় পর্যটক পেতাম। পায়রা সেতু উদ্বোধনের পর আমরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলাম। আশা করছি এই সেতু খুলে দিলে বেশী পর্যটক হবে। সেই লক্ষে হোটেলের রুম, জনবল, সুযোগ-সুবিধা বাড়াচ্ছি যাতে আগত পর্যটকদের সেবার মান আগের থেকে বেশী দেয়া যায়।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, সেতু চালু হলে কুয়াকাটার একটি আমুল পরিবর্তন হবে। ঢাকা-কুয়াকাটার দূরত্বটা কমে যাওয়ার কারনে ১০-১২ ঘন্টার পথ ৫-৬ ঘন্টায় পৌঁছানো যাবে যে কারনে বর্তমানের থেকে কয়েকগুণ পর্যটক বেশি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, তুষার জানান, বর্তমানে কুয়াকাটায় রাত্রিযাপনের ধারণ ক্ষমতা ১৫ হাজার রয়েছে। সেতু খুলে দিলে এর কয়েকগুণ পর্যটক হওয়ার সম্ভাবনায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ফাইভস্টার-থ্রিস্টার মানের হোটেল তৈরিতে অনেকে কাজ শুরু করছে।
কলাপাড়া পৌর শহর ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম জানান, বাঙালির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যার অবদান অসামান্য। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই ব্যাবসায়ীরা তাদের বানিজ্যিক প্রসার ঘটাতে নুতন পরিকল্পনা শুরু করেছেন।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন জানান, রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতিতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ উন্নয়নের আশার আলো দেখছে। এই এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক চাকা সচল হবে। এই সেতু উদ্বোধনের খবরে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে এখানকার মানুষ।