রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় গ্রামের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দুর্দান্ত অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে গ্রামের চেয়ারম্যানসহ অন্যরা ছেলেটির সব দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেন। হয়তো তারা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, এই ছেলেটি একদিন দেশের মানুষের মন জয় করে নেবে।
বলছিলাম নবম শ্রেণির ছাত্র হাবিব আরিন্দা’র কথা। গত শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) ফয়সাল রদ্দি ও আসিফ ইসলাম পরিচালিত ‘পাঠশালা’ সিনেমার মধ্য দিয়ে ১৪ বছরের এই কিশোরের অভিষেক ঘটেছে। সিনেমার কেন্দ্রীয় ‘মানিক’ চরিত্রে অভিনয় করে এরইমধ্যে দর্শকদের প্রশংসা পাচ্ছে সে।
হাবিব খুব উচ্ছ্বসিত। শিশুশিল্পী হয়েও অনুভূতি প্রকাশ করলো একদম বড়দের মতো করেই-এতো কম বয়সে এমন সুযোগ পেয়েছি সেজন্য অনেক ভালো লাগছে। একজন অভিনেতার জন্য এটা অনেক বড় বিষয়। যারা সিনেমাটি দেখছেন তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
টোকাই নাট্যদলের হয়ে নিয়মিত মঞ্চে অভিনয় করতো হাবিব। দলটিতে কাজ করার সুবাদেই ‘পাঠশালা’য় তার যুক্ত হওয়া। হাবিব বলে, ঢাকায় এসেই টোকাই নাট্যদলে আমি কাজ শুরু করি। এখানে আমার অভিনয় দেখে ফয়সাল ভাই ও আসিফ ভাই আমাকে সিনেমাটিতে নেওয়ার জন্য বলেন। তখন আম্মুর অনুমতিতে ‘পাঠশালা’য় কাজ করি।ক্যামেরার সামনে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো প্রশ্নে হাবিবের ভাষ্য- মঞ্চে অনেকবার অভিনয় করেছি। কিন্তু ক্যামেরার সামনে এবারই প্রথম। শুটিংয়ের প্রথম কয়েকদিন অনেক ভয় লেগেছিল। ভাইয়ারা আমাকে সবকিছু এতো সুন্দর করে বুঝিয়ে দিতেন যে, পরে আর সেই ভয়টা কাজ করতো না।
‘পাঠশালা’ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ১০ বছরের এক মেধাবী পথশিশু মানিকের জীবন জয়ের অদম্য গল্প নিয়ে। মানিক চরিত্রেই অভিনয় করেছে হাবিব। সিনেমাটি নিয়ে তার মত- এমন একটি গল্পে অভিনয় করতে পেরে সত্যি অনেক ভালো লাগছে। আমাদের সমাজের অনেক ছেলেমেয়ে টাকার অভাবে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমি মনে করে অবহেলিত এমন পথশিশুদের জন্য আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত। আমি বড় হয়ে তাদের জন্য নিজ থেকে কিছু করার চেষ্টা করবো।
হাবিবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অভিনয়কে ঘিরেই। অভিনয় দিয়ে নিজেকে নিয়ে যেতে চায় অনন্য এক উচ্চতায়। সে বলে-পড়াশোনার পাশাপাশি সিনেমায় কাজ করতে চাই নিয়মিত। ‘পাঠশালা’ সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করতে চাই, পাশাপাশি বাংলা সিনেমাকেও জয় করতে চাই।
অভিনয়ে হাবিব আদর্শ মানে গুণী নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদকে। কিন্তু বড় হয়ে হতে চান জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র মতো, আমি সালমান শাহ’র অনেক বড় ভক্ত। উনার প্রায় সব সিনেমাই আমি দেখেছি। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ও ‘আনন্দ অশ্রু’ সিনেমা। একজন মানুষ চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন, নিশ্চয় উনার মধ্যে অন্যরকম কিছু বিষয় ছিলো। যেটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমি বড় হয়ে সালমান শাহ’র মতো একজন অভিনেতা হতে চাই-যোগ করে হাবিব।
হাবিবের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ হলেও বর্তমানে সে পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে থাকে। পড়ে বছিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে। তিন ভাই, তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট হাবিব।