শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামে এক যুবকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ধর্মীয় উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করা হয়। বিপ্লবকে ফাঁসানোর উদ্দেশে দুর্বৃত্তরা এ কাজ করে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এছাড়া ফেসবুক আইডি হ্যাকের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে বিপ্লবের ফেসবুক আইডি থেকে ধর্মীয় উসকানিমূলক তথ্য প্রচারের পর তার বন্ধু তালিকার বেশ কয়েকজনের কাছে আপত্তিকর মেসেজ আসে। ওইদিন সন্ধ্যায় বিপ্লব আইডি হ্যাক হয়েছে মর্মে বোরহানউদ্দিন থানায় জিডি করেন। এরপর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিপ্লবকে থানা হেফাজতে রাখে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ আরেক ব্যক্তিকে হ্যাকার সন্দেহে আটক করে। এরপর পুলিশ নিশ্চিত হয়, বিপ্লবকে ফাঁসাতে হ্যাকাররা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
এসপি আরও বলেন, এ ঘটনার জের ধরে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বোরহানউদ্দিন উপজেলা সদরের ঈদগাহ মসজিদ চত্বরে ‘তৌহিদি জনতা’ ব্যানারে রোববার (২০ অক্টোবর) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয়। তখন পুলিশ স্থানীয় আলেমদের সঙ্গে কথা বললে তারা সমাবেশ না হওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু রোববার সকাল থেকে পুলিশের কাছে খবর আসে সেখানে মাইকিং হচ্ছে এবং স্টেজ বানানো হচ্ছে। এরপর সেখানে গিয়ে আমি উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলি। তারা সবাই আমার বক্তব্য শোনেন। যখন আমি স্টেজ থেকে নেমে আসি তখন একদল উত্তেজিত জনতা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তাদের হাত থেকে বাঁচতে পাশের একটি রুমে গিয়ে আশ্রয় নেই। যখন হামলাকারীরা ওই রুমের জানালা ভেঙে ফেলে তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে কাজ না হওয়ায় ওপরের দিকে গুলি চালানো হয়। এতে আমার জানা মতে একজন পুলিশ সদস্যের বুকে গুলি লেগে গুরুতর আহত হন। আমরা আহতাবস্থায় যাদের হাসপাতালে পাঠাই, তাদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। বাকি আরও থাকতে পারে, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, বিপ্লবের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টের প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় মাহাফুজ, মিজান, শাহীন ও মাহবুব নামে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশত। এ ঘটনায় এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।