শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫০ অপরাহ্ন
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য বন্দর পটুয়াখালীর আলীপুর-মহিপুরে জাটকা ইলিশে সয়লাব বাজার। প্রতিদিন গড়ে অর্ধকোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এখানে।
অথচ সরকার ঘোষিত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত জাটকা শিকারে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও তা কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ। সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্দরের প্রায় সব আড়ৎয়েই জাটকা ইলিশের স্তূপ।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে জাটকা ক্রয়-বিক্রয়। কিন্তু প্রশাসনের উপস্থিতি শুধু মহাসড়ক পর্যন্ত সীমিত।
গত ৫ দিনে কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ, নিজামপুর কোস্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসন কয়েকটি অভিযানে কিছু জাটকা জব্দ করলেও সেগুলো মূলত পরিবহন ও মহাসড়ক কেন্দ্রিক ছিল।
পরে জব্দকৃত মাছ বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদরাসায় বিতরণ করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আড়ৎ শ্রমিক জানান, প্রতিদিন বন্দরে শত শত মণ জাটকা বিক্রি হয়। কোস্টগার্ড শুধু ক্যাম্পের সামনে মহাসড়কে দু-একটা ট্রাক থামায়, কিন্তু বন্দরের ভেতরে ঢোকে না।
আলীপুর বন্দর এলাকার জেলে শাহে আলম (ছদ্মনাম) বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে জাটকা ধরি। সাগরে এখন বড় ইলিশ নেই, জাল ফেললেই ছোট জাটকা আসে।
এগুলো না ধরলে ঘরের চুলা জ্বালবে না। আরেক জেলে খবির ঘরামি বলেন, সরকার যদি বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করতো, আমরা জাটকা ধরতাম না।
কিন্তু এখন এনজিওর কিস্তির টাকা আর বাচ্চাদের খাবার জোগাতে গিয়ে জাটকাই ভরসা।
এদিকে স্থানীয় এক চালানি আড়ৎদার কাওসার বলেন, জাটকা ধরা বা বিক্রির দায় শুধু জেলেদের নয়। বাজারে চাহিদা আছে, ক্রেতারা কিনতে আসে। প্রশাসন অভিযান করলেও সব জায়গা কভার করা সম্ভব হয় না।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহাকে এই নম্বরে 01769459617 একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তাই তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি। পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হোসাইন বলেন, আমরা সড়কে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি।
আমাদের কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ৫ দিনের ট্রেনিংয়ে ছিলেন তাই বন্দরে অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।
আগামীকাল শনিবার থেকে আমরা বন্দরগুলোতে অভিযান চালাবো। কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন সাদেক বলেন, সম্প্রতি কলাপাড়া উপজেলায় বেশ কয়েকটি জাটকা বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছি।
জব্দকৃত মাছ বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদরাসায় বিতরণ করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, শুধু মহাসড়কে নয়, মূল বন্দর এলাকাতেও নিয়মিত অভিযান চালানো না হলে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কোনো সুফল মিলবে না।
মোয়াজ্জেম হোসেন
কলাপাড়া