বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১২ পূর্বাহ্ন
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়ে লামিয়া বেগম নামের এক গৃহবধূ পুড়ো এলাকা জুড়ে চরাঞ্চলের সৃষ্টি করেছে।
তবে একদিকে যেমন আনন্দের ঘনঘটা অন্যদিকে জীবনে নেমে এসেছে ঘোড় অন্ধকার।
এই আনন্দের মাঝেই আজ ফুটে উঠেছে বেদনার ছাপ। নবজাতকদের পুষ্টি ও চিকিৎসার খরচ যোগান দিতে দিশেহারা হয়ে গেছেন সোহেল দম্পতি।
তাদের সীমিত আয়ে সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত এর মধ্যে এক সঙ্গে পাঁচ নবজাতকের জন্ম।
যদিও প্রথম পর্যায়ে খুব আনন্দ হয়েছিলো কিন্তু এখনতো তাদেরকে বাচিয়ে রাখতেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সোহেলের জন্য।
গত ৬ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন লামিয়া বেগম নামে এক নারী।
তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরাকাঠী গ্রামের মুদি দোকানদার সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী।
স্থানীয় বাহেরচর বাজারে তার একটি ছোট মুদি দোকান রয়েছে। সেই দোকানের আয়ের উপর চলে পরিবার।
সোহেল হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিদিন দুধ ও ন্যাপকিন কিনতেই দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়। শিশুরা অসুস্থ হলে চিকিৎসার খরচও যোগান দিতে হয়।
আমার মতো সীমিত আয়ের মানুষের পক্ষে এই খরচ চালানো কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, সন্তান প্রসবের পর হাসপাতালে নয় দিন থাকতে হয়েছে।
ধার-দেনা ও এনজিও ঋণ মিলিয়ে এখন প্রায় দুই লাখ টাকা দেনা হয়ে গিয়াছি। স্ত্রীরও প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবারের, কিন্তু তা কেনার সামর্থ্য আমার নেই।
সোহেলের শাশুড়ি শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমার তিন নাতি ও দুই নাতনির নাম রাখা হয়েছে হাসান, হোসাইন, মোয়াজ্জেম, লাবিবা ও উমামা। সিজার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে এদের জন্ম হয়।
অনেকেই এসে দেখে গেছেন, সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সহযোগিতা করেননি।
মা-মেয়ে মিলে সারাদিন বাচ্চাগুলোর যত্ন নিচ্ছি, এতে আমরাও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারিভাবে যদি কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে হয়তো এই নিষ্পাপ শিশুদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিন্ত হবে।’
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রউফ বলেন, ‘নবজাতকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
বাউফল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের অসহায় পরিবারকে সহায়তার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের বরাদ্দ থাকে। তারা যদি নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেন, আমরা সহযোগিতা করবো।’ বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা।
যদি পরিবারটি উপজেলা প্রশাসনের কাছে সহায়তা চায়, তাহলে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।
মো.আরিফুল ইসলাম বাউফল (পটুয়খালী) প্রতিনিধি