শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে নিজ ঘরে কাচ পড়ে পাঁচ বছরের এক শিশুর গলা কেটে যাওয়ার পর ‘কল্লা কাটার’ গুজব ছড়িয়ে পড়েছে নতুন করে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে জেলার বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সূর্যপাড়া মহল্লার একটি বাড়িতে শিশুটি আগত হয়। রক্তাক্ত গলা নিয়ে শিশুটিকে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
পদ্মাসেতুর জন্য এক লাখ মানুষের মাথা লাগবে বলে ছড়িয়ে দেওয়া গুজবের মধ্যে এই ঘটনার পর এলাকায় ‘ছেলেধরা’ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আহত ওই শিশুর নাম মিজানুর রহমান মিজান। তার বাবার নাম আতিকুর রহমান। রাতেই মিজানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, শিশুটি মায়ের সঙ্গে ঘরের মেঝেতে শুয়ে ছিল। ওই ঘরে শোকেসের খসে পড়া কাঁচের টুকরো পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো কারণে শোকেসের কাচ খসে পড়ে শিশুটির গায়ের ওপর পড়ে। এতে তার গলা কেটে যায়।
কিন্তু এর পর পর ‘ছেলেধরা’ শিশুটির গলা কাটার চেষ্টা হয়েছে বলে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে শিশুর মা ফিরোজা বেগমের বরাদ দিয়ে তার দাদি রেখা বেগম জানান, রাতে একজন লোক ঘরে ঢুকে। এ সময় তার পুত্রবধূর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এতে শোকেসের কাঁচ ভেঙে পড়ে। তবে শিশুটির গলা কীভাবে কেটে গেছে তা বলতে পারেননি তিনি।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘কাচ পড়েই শিশু মিজানের গলা সামান্য কেটে যায়। এটি শুধুই গুজব ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা এ ধরনের গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
পদ্মাসেতুর জন্য এক লাখ মানুষের মাথা সংগ্রহে সারাদেশে ৪২টি দল ছড়িয়ে পড়ার উদ্ভট তথ্য কিছুদিন আগেও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়ানো হয়েছে। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এরই মধ্যে র্যাব-পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন যাদের মধ্যে দুই জন জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত।
কিন্তু গুজব এত ছড়িয়েছে যে দেশবাসীর মধ্যে তা প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ছেলেধরা সন্দেহে খোদ রাজধানীতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে অপরিচিত একজনকে। গণপিটুনির শিকার হয়েছেন আরো বহু জন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার নেত্রকোণায় একটি শিশুকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা গুজবের আগুনে নতুন করে ঘি দেয়।