বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন
ক্রাইমসিন ডেক্সঃ
পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিবেশী মো. বাচ্চু দুরানী (৫৪) ষড়যন্ত্র পূর্বক প্রবোধ হালদার (৫৫) কে পরিকল্পিতভাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৯নং আসামী করা হয়েছে।
এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রবোধ হালদারের একমাত্র সন্তান সুইটপি প্রিমা হালদার (২৭)। সোমবার (২৭ জানুয়ারী) বেলা সাড়ে বারো টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী বরিশাল সিটি কলেজের মো. জুবায়ের রহমান খান ও মো. আবু তাওহিদ, বরিশাল সরকারী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। তারা বলেন, দায়েরকৃত মামলার ঘটনাস্থলে ঘটনার দিন তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সে সময় আসামী প্রবোধ হালদার ঘটনাস্থলে ছিলেন না।
অস্ত্র ছিল পুলিশ ও আ.লীগ নেতাকর্মীদের কাছে। আর একজন অসুস্থ বয়স্ক রোগীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রপূর্বক মামলা হলেও পুলিশ তা পর্যবেক্ষণ না করে কিভাবে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়।
লিখিত বক্তব্যে সুইটপি প্রিমা হালদার বলেন, আমি আমার বাবার জেলহাজত থেকে মুক্তি চাই। তিনি নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড পূর্ব রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা । তার বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ হবার পর ২০১০ সালের পর থেকে কিছুই করে না। মা পেশায় শিক্ষিকা। মায়ের বেতনের অর্থ দিয়েই চলে আমাদের সংসার।
তিনিও ২০১৮ সালের স্টোক করেছিলেন। বর্তমানে মা-বাবা দুই জনের শারীরিকভাবে অসুস্থ। এরমধ্যে আবার পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিবেশী মো. বাচ্চু দুরানীর (৫৪) ষড়যন্ত্রে বাবা রয়েছে জেলহাজতে। ২০১৭ সাল থেকে আমার বাবা হৃদরোগে আক্রন্ত।
পর্যায়ক্রমে নিউরো মেডিসিন রোগে ও চোখে ছানি পরলেও অর্থের অভাবে সময় মত সব চিকিৎসা সেবা সহ ঔষধও ক্রয় করে পারছি না। ২০২১ সালে আমার বাবা প্রতিবেশী বাচ্চু দুরানী’র বিরুদ্ধে ‘বাথরুমের ময়লা দ্বারা আশেপাশের বসবাসকারী জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা করার আবেদন’ এর অভিযোগ এনে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) মেয়র বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছিলেন। এরপর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে নানা বিষয় নিয়ে তর্ক-বির্তক হয়। আমাদের বসতঘরের সামনে সিঁড়ি নির্মাণের সময় আমার বাবাকে মারতে আসে প্রতিবেশী বাচ্চু দুরানী। তখন আমি ৯৯৯ কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সেই থেকেই আমাদের পরিবারের সদস্যদের উপর ক্ষিপ্ত থাকে প্রতিবেশী বাচ্চু দুরানী। যে কারণে আমার বাবার বিরুদ্ধে প্রতিবেশী বাচ্চু দুরানী বাদী হয়ে পরিকল্পিতভাবে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় আমার বাবা কে আসামী করে মামলা দিয়েছে। যার নং ৪৭/৭২৪। তারিখ: ২৪/১১/২০২৪ইং। দায়েরকৃত এই মামলার ৯ নং আসামী আমার বাবা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাবার অসুস্থার তথ্য যাচাই বাছাই না করে চলমান মাসের গত ২২ জানুয়ারী দিবাগত রাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং আদালতে প্রেরণ করেন। বর্তমানে আমার বাবা জেলহাজতে রয়েছেন। আর দায়েরকৃত মামলায় ঘটনাস্থলের কোন স্বাক্ষী নেই তিনি আরো বলেন, দায়েরকৃত মামলায় বাচ্চু দুরানী উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে মো. সাব্বির দুরানী (২৫) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গত ০৪/০৮/২০২৪ইং তারিখ দুপুর পৌনে দুই টায় আসামীরা তার ছেলেকে মারধর করে।
অথচ আমার বাবা তখন বসতঘরে ছিল। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে আমার বাবা কে শেবাচিম হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. জাকির হোসেন এর চিকিৎসা সেবা নিয়ে এখনও ঔষধ সেবন করে আসছে, আবার ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট থেকে শেবাচিম হাসপাতালের নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. অমিতাভ সরকার এর চিকিৎসা সেবা নিয়ে এখনও ঔষধ সেবন করে আসছে।
২০২২ সাল থেকে চোখে গুকোমা, চোখে প্রেসার ও ছানি রোগে আক্রান্ত। প্রথমে রুপাতলী গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালের চিকিসৎসা সেবা নিলেও পরে ২০২৫ সালের ৪ জানুয়ারী শেবাচিম হাসপাতালের অধ্যাপক ও চক্ষু বিভাগীয় প্রধান অব. ডা. ডি.বি. পাল এর চিকিৎসা সেবা নিয়ে এখনও ঔষধ সেবন করে আসছে। আমার মায়ের আয়ের অর্থ দিয়ে সংসারের খরচ চালতে হিমশিম খেতে হয়।
সেখানে মা বাবার ঔষধ সময় মত সব কিনতে পারি না। যখন যে রোগের সমস্যা বেশি হয় তখন সেই রোগের ঔষধ ক্রয় করার চেষ্টা করি। আমি আপনাদের কাছে এসেছি, পারিবারিক জীবনে নানা সমস্যা থাকার পরও আমারা অভাব অনটনের মধ্যে বসবাস করতেছিলাম। সেই জীবনের মধ্যে চলে আসলো মামলা।
এখন মায়ের আয়ের অর্থ দিয়ে বাবার মামলার পেছনে অর্থ ব্যয় করবো ? সংসারের বাজার করবো? মায়ের অসুস্ততার জন্য ঔষধ ক্রয় করবো? দায়েরকৃত মামলার বাদী বাচ্চু দুরানী বলেন, তার অভিযোগে কোন মিথ্যা নেই। তিনি সত্য তথ্য তুলে ধরে মামলা দায়ের করেছেন।