শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: ঝালকাঠির রাজাপুরে যৌতুকের জন্য আমেনা আক্তার (২৬) কে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী অপুর্ব কুমার পালসহ ৫/৬ জন মিলে এ হামলা চালায় বলে জানান আমেনা আক্তার।
শনিবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়ন থেকে রাজাপুরে যাবার পথে শুক্তাগর গ্রামের স্লুইচগেট সংলগ্ন ফকির বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত নিয়ে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আমেনা আক্তার।
আহত আমেনা আক্তার জানায়, ৩ বছর আগে স্বামী অপুর্ব কুমার পাল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। আদালতে এফিডেভিট করে ধর্মান্তরিত হয়ে তার ফেসবুক আইডিতেও স্ট্যাটাস দিয়ে জানান দেয় তিনি মুসলমান। তার সাথে সংসারিক জীবনে আমিও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আকৃষ্ট হয়ে জেনে-বুঝে ৩ বছর পরে আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করি। ধর্ম পরিবর্তনের পরে স্বামী অপুর্ব পাল থেকে আবদুল্লাহ আল মইন আর আমি শেফালি দাস থেকে আমেনা আক্তার নাম রাখি। এর পর থেকেই যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য আমার উপরে নির্যাতন শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার কারণে আমার বাবার বাড়ি যেতে পারি না। তাদের কিছু বলতেও পারিনা। তবে, কিছুদিন পরে জানতে পারি আমার স্বামী ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নয় তিনি প্রতিবেশী এক মহিলার সাথে পরকিয়া সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। আমি সব জানতে পেরে তাকে এসব ছাড়ার জন্য চাপ দিলে আমার উপরে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে ৫ লাখ টাকা এনে দিতে বলে। এর আগেও তার ব্যবসার জন্য অনেক টাকা তাকে এনে দেই ভাইয়ের কাছ থেকে। এখন ধর্ম পরিবর্তনের কারণে আমার বাবার পরিবার আমাকে মেনে না নেয়ায় টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি। তাই আমাকে ঢাকায় রেখে ব্যবসার সব কিছু বিক্রি করে আমাদের ৩ বছরের ছেলেকে আমার কাছে রেখে ৬ বছরের ছেলেকে নিয়ে সে এলাকায় চলে আসে। পরে আমি জানতে পারি ওই মহিলাকে নিয়ে ঝালকাঠিতে ভাড়া বাসায় থাকে। এখন আমি সব হারিয়ে অবিভাবকহীন হয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
এ বিষয়ে আমি কয়েকজন মেম্বার এবং সমাজের মানুষকে নিয়ে মীমাংসার জন্য বসলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালায়।
এ বিষয়ে অপুর্ব কুমার পাল (আব্দুল্লাহ আল মইন) বলেন, তার সাথে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলায় সে আমার ঘর থেকে টাকা পয়সা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে ২ মাস পুর্বে পালিয়ে যায়। আমি এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তার সহযোগিদের নিয়ে আমাকে হয়রানি করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।