শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পনেরোটিরও বেশী অবৈধ ইটভাটায় অবাধে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইটভাটা স্থাপন করতে হলে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী হাইব্রিড হফম্যান, জিগ-জ্যাগ, ভার্টিক্যাল শ্যাফট কিলন্ অথবা পরীক্ষিত নতুন প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব ইটভাটা স্থাপন করার বিধান রয়েছে।
উপজেলার রায়বালা, কুকুয়া, হলদিয়া, মহিষডাঙ্গা, পাতাকাটা, শাঁখারিয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারের নীতিমালা তোয়াক্কা না করে কোনো রকম অনুমোদন ও পরিবেশ অধিপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অনগুলো ইটভাটা চলছে। সবগুলো ইটভাটাই লোকালয়ের পাশে এবং ফসলের মাঠে স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে হাত করেই এসব ভাটা চালানো হয় বলে ইটভাটাসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, আমতলী উপজেলার রায়বালা গ্রামের মেসার্স মৃধা ব্রিকসের মালিক মোঃ মাহবুব আলম মৃধা, কুকুয়া এ এম বি ব্রিকসের মালিক মোঃ বাচ্চুসহ অন্য মালিকদের ইটভাটাগুলোর পাশে করাতকল (স-মিল) বসিয়ে কাঠ চেরাই করে ভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটভাটা শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ভাটার পাশে প্রদর্শনের জন্য সামান্য কয়লা মজুদ থাকে এবং বছরের পর বছর সেগুলো অব্যবহূতই থেকে যায়। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৫৯ নং আইন) এর ধারা ৮ (৩) (ঙ) এর শর্তাংশে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার, উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা পরিচালনার ক্ষেত্রে দূরত্ব সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা থাকলেও মানছেনা ইটভাটার মালিকরা। লোকালয়ে এবং আবাসিক এলাকা, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা, বাগান, জলাভূমি, কৃষি জমিতে স্থাপিত আমতলী উপজেলার এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসন অথবা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বেশ কয়েক ব্যক্তি। তাঁরা জানান, যাঁরা ইটভাটা করছেন তাঁরা খুবই প্রভাবশালী। এ কারণে সাধারণ মানুষ ভয়ে কিছু বলছে না। অভিযোগের বিষয়ের জানতে চাইলে স্টার ব্রিকসের মালিক মোঃ মধু রাজি হননি। উপজেলার আরও একটি ব্রিকসের মালিক নাম না প্রকাশে বলেন, অনেক বছর আগে তাঁদের ভাটায় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ভাটা বন্ধ করে দিয়েছিল।
পরে তাঁরা ভাটাটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই পুনরায় চালু করেছেন। লোকালয়ের খুব কাছে স্থাপিত এসব ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া শিশু ও বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আমতলী উপজেলা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা । অভিযোগ অস্বীকার করে পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান সরকার মুঠোফোনে জানান, ওইসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে বরগুনা জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। এবং অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।