শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে রুমন বিশ্বাসকে গলাকেটে হত্যাকারী নিজেই মামলার বাদী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকাণ্ড থেকে নিজেকে আড়াল করতে নিহত রুমনের মা ও সৎ ভাইকে বাদ দিয়ে এলাকার চিহিৃত দালাল মিঠু বিশ্বাস এ মামলার বাদী হয়েছেন।
এমন অভিযোগে এনে ঘটনায় প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে একটি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশাল নগরের আগরপুর রোডের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রুমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত দাবি করেন মামলার প্রধান আসামি আল মামুনের বোন মারুফা আক্তার পপি। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে মারুফা আক্তার পপি বলেন, গত ৩ জানুয়ারি নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে রুমন বিশ্বাসকে গলাকেটে হত্যা করেছে ওই এলাকার নুরুল হক হাওলাদারের ছেলে বাপ্পি। এ কথাটা গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ্যে বলেছেন নিহত রুমনের মা। তবে রুমন হত্যা মামলায় বাপ্পিকে চার নম্বর আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, রুমনকে যারা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে তার মধ্যে মিঠু বিশ্বাস প্রধান পরিকল্পনাকারী। মিঠু বিশ্বাস ও আজিজ বিশ্বাস মিলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রুমনকে হত্যা করেছেন। তিনি আরও বলেন, রুমন হত্যা মামলায় আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী হাওলাদার, আমার ভাই আল মামুন এবং আমার ছেলে জিহাদকে ফাঁসাতে মামলার আসামি করা হয়েছে। তারা কেউই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না। পূর্ব শত্রুতা ও জমি বিক্রির টাকার ভাগ না পেয়ে এলাকার চিহিৃত দালাল মিঠু বিশ্বাস ও আজিজ বিশ্বাস আমার ভাইকে এ মামলায় প্রধান আসামি করেছেন। রুমন হত্যা মামলায় তার মা মামলার বাদী না হয়ে হত্যাকারী মিঠু বিশ্বাস নিজেকে আড়াল করতে মামলার বাদী হয়েছে। পাশাপাশি ওই মামলায় রুমনের মাকে চার নম্বর সাক্ষী করা হয়েছে। এছাড়াও প্রকাশ্যে যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো সেই ঘটনায় মিঠু বিশ্বাসের পরিবারের তিনজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এলাকার অন্য কোনো লোক এ মামলায় সাক্ষী নেই।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন নলছিটি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে পুলিশের সামনে মিঠু বিশ্বাসের আপন ভাই আজিজ বিশ্বাসের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম বলেছেন বাপ্পি রুমনকে গলাকেটে হত্যা করেছেন। এমন বক্তব্য গণমাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে পপি আরও বলেন, রুমন বিশ্বাসের বাবা সত্তার বিশ্বাস দুই বিয়ে করেছেন। আব্দুর রহিম প্রথম ঘরের আর রুমন দ্বিতীয় ঘরের ছেলে। এক ভাই মারা গেলে বাবার পুরো সম্পত্তি একজনের নামে থাকবে তাই পরিকল্পনা করে মিঠু বিশ্বাস, আজিজ বিশ্বাস ও আব্দুর রহিম এ হত্যকাণ্ড ঘটিয়েছেন। অথচ যারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত তারাই আবার মামলার বাদী ও সাক্ষী। মামলা দায়েরের পর তার বাবা, ভাই ও ছেলে পলাতক রয়েছেন। প্রাণের ভয়ে নিজেরাও বাড়িতে যেতে পারছেন না। রুমন হত্যার বিচার দাবি করে পপি বলেন, আমরাও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। তবে যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত না তাদের বাদ দিয়ে প্রকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হোক। এজন্য তিনি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আল মামুনের বোন আফরোজা খানম লাকি, দপদপিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার জেসমিন নাহার সিরিন, আল মামুনের স্ত্রী জুথি প্রমুখ।