শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনায় যৌতুকের দাবীতে এক গৃহবধুকে হত্যা করে মুখে বিষ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক গৃহবধুকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। গৃহবধূ তানজিলা বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের বানাই এলাকার মো: জাহাঙ্গীরের স্ত্রী। জানা যায়, শুক্রবার রাত আটটার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গৃহবধুকে নিয়ে আসেন তার স্বামী জাহাঙ্গীর ও তার পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে উপস্থিত হন গৃহবধুর মা হাওয়া বেগম ও বাবা রাজা মিয়া। হাওয়া বেগম অভিযোগ করেন, তার মেয়ের নিকট জামাতা জাহাঙ্গীর যৌতুক দাবী করে শারিরীক নির্যাতন করেছে। এক পর্যায়ে তানজিলাকে শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার সময় তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তানজিলার বাবার বাড়ী সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের লবনগোলা গ্রামে। তানজিলার বাবা রাজা মিয়া বলেন, তার মেয়েকে যৌতুকের দাবীতে প্রায়ই নির্যাতন করেছে জামাই জাহাঙ্গীর, তার মা ও বোন। আমার মেয়ের তলপেটে প্রচন্ড আঘাতে পায়খানা প্রসাব বের হয়েছে। এ ছাড়া চোখের নিচে কালো দাগ ও গলায় দাগ দেখা গেছে। আমার মেয়েকে মারপিট করে হত্যা করেছে। এরপর তানজিলার মুখে বিষ ঢেলে দেয় তারা। তানজিলার শনিবার ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্ত হলে আমি মামলা করবো। এ বিষয়ে তানজিলার মা হাওয়া বেগম বলেন, আট বছর আগে তানজিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তানজিলা শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছিল। শ্বশুর বাড়িতে অবস্থানকালে যৌতুকের জন্য তানজিলাকে প্রায়ই মারধর করেছে। এ কারনে শ্বশুরবাড়ির লোকদের সঙ্গে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত তানজিলার। আমার জামাই তানজিলার মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রমাণ করার জন্য তানজিলার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে আসে জামাই জাহাঙ্গীর, শাশুড়ি সাজেদা বেগম এবং দেবর বাশার। এর পর ডাক্তাররা তানজিলাকে মৃত ঘোষণা করলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় তারা। এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে তানজিলাকে মৃত অবস্থায় কয়েকজন লোক বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এ সময় তানজিলার মুখ থেকে বুদবুদ ফেনা বের হচ্ছিল। তার সঙ্গে আসা স্বজনরা জানান, তানজিলা কীটনাশক পান করেছেন। বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। ঘটনাস্থলে আমি নিজেই গিয়েছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।