শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন
আগেই শোনা গিয়েছিল চলচ্চিত্রের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড ও অনিয়মের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ১৭টি সংগঠনের পক্ষ থেকে বয়কট করা হতে পারে অভিনেতা ও শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনগুলো।
বুধবার (১৫ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান কালার ল্যাব হলরুমে ‘চলচ্চিত্র শিল্প রক্ষার লক্ষ্যে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জায়েদ খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাকে বয়কটের কথা বলা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনের নেতারা।
সেসময় পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, জায়েদ খানকে নিয়ে অনেকের বহু অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে প্রযোজক ও পরিচালকদের সম্মান না দিয়ে, তাদের হেয় করে কথা বলার অভিযোগ রয়েছে। শুধু প্রযোজক ও পরিচালকই নয়, অনেক শিল্পীকেও তিনি নানাভাবে অপমান ও হয়রানি করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। একজন শিল্পীর কাছ থেকে এটা মোটেও কাম্য নয়। তাই আমরা ১৮ সংগঠন একত্রিত হয়ে জায়েদ খানকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এছাড়াও জায়েদ খানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসের (৩ এপ্রিল) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খরচের জন্য নগদ ৬ লক্ষ টাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে সরাসরি গ্রহণ করেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। কিন্তু উৎসব উদযাপন সম্পর্কিত জাতীয় কমিটি কর্তৃক গঠিত অর্থ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বাচ্চু তাকে সভায় উপস্থিত থেকে ৬ লাখ টাকার হিসাব দেওয়ার জন্য বারবার চিঠি দিয়ে অনুরোধ করলেও তিনি উপস্থিত হননি এবং এর হিসাবও দেননি।
প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, চলচ্চিত্রের স্বার্থবিরোধী কাজ করার জন্য জায়েদ খানের প্রযোজক সমিতির পদটি বাদ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কেউ জায়েদের সঙ্গে কাজ করবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এখন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জায়েদ খানের সঙ্গে সবাইকে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো নিয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবারের প্রণয়নকৃত নীতিমালা যারা মেনে কাজ করবেন, শুধুমাত্র তাদেরকে নিয়েই চলচ্চিত্র নির্মিত হবে। চলচ্চিত্রের স্বার্থে যারা এই নীতিমালা মানতে অপারগতা প্রকাশ করবেন, তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলেও সতর্ক করেন চলচ্চিত্র নেতারা।
এদিকে শিল্পী সমিতির সভাপতিকে আগেই বয়কট করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা আনতে ও নির্মাণ ব্যয় কমাতে গত বছরের অক্টোবরে যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সংগঠন। সে নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একটি শুটিং ফ্লোরে মিশা একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানানো হয়। তখন প্রযোজক সমিতি তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়। প্রযোজক সমিতির সদস্যরা মিশাকে নিয়ে চলচ্চিত্র করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। সে নিষেধাজ্ঞা এখনও কার্যকর রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, প্রযোজক ফিরোজ শাহি, মোহাম্মদ ইকবাল, শামসুল হক এবং অভিনেতা ওমর সানীসহ অনেকে।