বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন
একদিকে করোনা আতঙ্ক, অন্যদিকে মশার উপদ্রপ-দুয়ে মিলে নাকাল বরিশাল নগরবাসী। করোনা মোকাবিলায় সিটি করপোরেশনের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট অনেকেই। তবে মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার আর খাদ্য পণ্য বিতরণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই, সাংগঠনিক এবং ব্যক্তি পর্যায়ে এগিয়ে এসেছেন সেচ্ছাসেবীরা।
ব্রজমোহন কলেজের কর্মচারী নওরাজ কবির। ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই দুঃসময়ে কাউন্সিলরদের পাশে না পাবার। সাংস্কৃতিক সংগঠক মারিফ বাপ্পি লিখেছেন, সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ বেঁচে না থাকায় নাগরিকদের অসহায়ত্বের কথা।
করোনাভাইরাসে সংক্রমণের আশঙ্কার মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থির নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কিনা জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে বরিশালবাসী প্রশ্ন তুলেছেন।
নদী খাল বাঁচা আন্দোলনের জেলার সদস্য সচিব জানান, করোনা ভয়বহতা, তারউপরে বরিশালে খাল পুকুর ভরাট থাকায় মশার উপদ্রুপ। নেই তেমন মশক নিধন কার্ক্রম। জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন থেকে যেভাবে সক্রিয় বরিশাল সিটি করোরেশন ততোটা সক্রিয়তা দেখায়নি এই করোনা মহামারিতে। মেয়রকে দায়িত্ব নেবার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচালারাল অফিসার মাকসুদুর রহমান বলেন, করোনা মোকাবেলিায় তারা ঘরে অবস্থান করতে চান। কিন্তু মশার যন্ত্রনায় তারা ঘরে থাকতে পারছে না।
সনাকের সদস্য ও উদীচীর সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ বলেন, করোনা মোকাবেলা বা জনগনকে সচেতনতায় মেয়য়ের নিসক্রিয়তায় তার কাউন্সিলররাও সক্রিয় নয়। নাগরিক সমাজ মেয়রকে কাছে পেতে চায় বলে জানান তিনি।
এদিকে, বুলবুল বা ফণি ঘুর্ণিঝড়ে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হলেও, এই দুর্যোগে তার কর্মসূচি জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি। নেই বিএনপির হেভিওয়েটদেরও তেমন কার্যক্রম।
তবে, বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান জানান, ‘পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে অনুরোধ করবো যে, মশা নিধনের কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে। আমরা ডেঙ্গতে যেন না পড়ি সে জন্য আমাদের আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
সড়কে জীবাণুনাশক ছেটানো হয়েছে এবং কয়েকটি স্থানে হাত ধোয়ার পানির ড্রাম বসিয়েছে সিটি করপোরেশন। এদিকে, ‘এক মুঠো চাল সংগ্রহ’ নামে ব্যতিক্রমী কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় বাসদসহ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন। অসহায়দের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন অনেকেই।
এ প্রসঙ্গে বাসদের বরিশাল জেলা সংসদ সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘শ্রমিক যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের ঘরে অভুুক্ত অবস্থা চলছে। তাদের জন্য আমরা বাড়ি বাড়ি যেয়ে মুষ্টির চাল তুলছি। সেটা আমরা শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করবো।’
কেবল ভোটের আগে নয়, করোনা-ডেঙ্গুসহ সব বিপর্যয়ে জনপ্রতিনিধিরা জনগণের পাশে থাকবে, এমন প্রত্যাশা বরিশালবাসীর।
সূত্র: ডিবিসি নিউজ