বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্সঃ
শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পার্কিং স্থান পাওয়ার দাবিতে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির ডাকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
এতে করে বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল থেকে বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের আওতাধীন সব গাড়ি রোগীদের সেবা বন্ধ রয়েছে।
ফলে বরিশাল থেকে ঢাকাসহ দূর-দূরান্তে যাওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা বিপাকে পড়েছেন।
চরফ্যাশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রোগী নিয়ে যেতে চাওয়া স্বজন বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে না, তার ওপর বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ধর্মঘট চলছে।
এ অবস্থায় ঢাকা শিশু হাসপাতালে রোগী নিয়ে কীভাবে যাবো কোন উপায় পাচ্ছি না।
অপর এক স্বজন জানান, তিনিও রোগী নিয়ে ঢাকায় যাবেন কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স যেতে চাচ্ছে না, এ অবস্থায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সও পাচ্ছি না কিন্তু ডাক্তারতো ঢাকায় রোগী রেফার্ড করেছেন।
এদিকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিক মো. আজিজুর রহমান বলেন, প্রায় দুইশ জন মালিকের সমন্বয়ে ১০৮টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের আওতায়।
এখানে কোন সিন্ডিকেট নেই, যে যত কম ভাড়ায় সেবা দিতে পারে তার চাহিদা তত বেশি থাকে।
তিনি বলেন, আমাদের মাঝে শৃঙ্খলা ফেরানোর নামে আগের পরিচালক বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স পার্কিংয়ের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেয়।
প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করে সেই জায়গা গাড়ি পার্কিংয়ের উপযোগী করে তোলে অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা।
আর এরপর থেকে দীর্ঘদিন সেখানে অ্যাম্বুলেন্স সুশৃঙ্খলভাবে রাখলেও কিছুদিন আগে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স রাখা যাবে না বলে হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক জানিয়ে দেয়।
বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আলম বলেন, পরিচালকের ওই আদেশের পর বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স আর হাসপাতালের ভেতরে পার্কিং করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বাহিরে অনিরাপদ জায়গায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো পার্কিং করার কারণে অনেক গাড়ির ব্যাটারিসহ যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে।
কিন্তু আমরা দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান শেবাচিম হাসপাতালের রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি, তাই আমাদের দাবি হাসপাতালের ভেতরে নির্ধারিত পার্কিং স্থান আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
মালিকরা জানান, দুইদিন আগে তাদের পার্কিং ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, হাসপাতাল পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরের স্মারকলিপি দিয়েছেন।
যেখানে তারা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল, তবে ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোন সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ১০৮টি অ্যাম্বুলেন্সের প্রায় দুইশ জন মালিক-চালক-শ্রমিক মিলে ধর্মঘটে গেছেন।
ধারবাহিকতায় বুধবার সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট চলছে, যা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
সেই সাথে প্রয়োজনে এই ধর্মঘট গোটা বরিশাল বিভাগজুড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স মালিক-শ্রমিকরা করবেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর জানান, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রোগী নেবে তাতে কোন বাধা নেই, তবে তারা পার্কিং প্লেস চাইলে সেটা হয় না।
হাসপাতাল এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বোত্র যাবে, তবে ঢাকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে এখন আমাদের জনবল কম রয়েছে সেক্ষেত্রে জনবল ঠিক হলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।