বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৪ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
উদযাপিত হচ্ছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ‘শ্মশান দিপালী’ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত, সড়ক অবরোধ-অগ্নিসংযোগ বরিশালে প্রথম দিনেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ন্যায্যমূল্যের দোকান প্র‍য়াত স্বজনদের স্বরনে কলাপাড়ায় শ্মশান দিপালী উৎসব পালিত আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের জন্য যুবদলের দোয়া মুনাজাত কলাপাড়ায় জাল ফেলাকে কেন্দ্র করে জেলেকে মারধর পটুয়াখালীতে সাবেক আ’লীগ ও বিএনপি করা দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে, সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক ৫ জন অনিয়মই যেন নিয়ম চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ইউনিয়ন বি এন পির প্রতিবাদ সমাবেশ গলাচিপায় গনআধিকার পরিষদের সমাবেশে হাজারো মানুষের ঢল কলাপাড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ‘এইচপিভি’ টিকা প্রদান যুবদলের ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত বাউফলে জামায়াতে ইসলামীর গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত সড়কে নিরাপত্তায় নতুন আইনের দাবি বরিশালে কলাপাড়া পৌরসভার রাজস্ব লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা
বরিশাল ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দখল করতে উদ্যোক্তা আমির’র ষড়যন্ত্র

বরিশাল ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দখল করতে উদ্যোক্তা আমির’র ষড়যন্ত্র

Sharing is caring!

স্টাফ রিপোর্টার ঃ

বরিশাল ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দখল করতে উদ্যোক্তা আমির হোসেন নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

গত কয়েকদিন ধরে উদ্যোক্তা আমির হোসেন কর্তৃক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অসাদাচরণ সহ বহিরাগতদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানে এসে হুমকী প্রদানের অভিযোগ এনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল সহ শিক্ষকরা।

ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’র অধ্যক্ষ এম.এ. রহিম জানান, এ প্রতিষ্ঠানে দুই জন উদ্যোক্তা থাকলেও আমির হোসেন বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি দখল করতে নানান ভাবে তাকে সহ শিক্ষকদের হয়রানি করে আসছে।

অপর উদ্যোক্তা ও শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় বিগত দুই বছর পূর্বে বরিশালের জেলা প্রশাসককে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করে চিঠি দেয় কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এই দুইটি বছর এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার সমস্যায় পড়তে হয়নি। কেননা জেলা প্রশাসক সভাপতি থাকায় প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ থাকে এবং সু-শৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক নিয়ে গঠিত ম্যানেজিং কমিটির বিরোধীতাকারী উদ্যোক্তা আমির হোসেন বহিরাগতদের এনে ভুল তথ্য দিয়ে শিক্ষকদের পদত্যাগের জন্য প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করলে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানায়।

এসময় চরমভাবে লাঞ্ছিত হয়ে রাগে-ক্ষোভে আমির হোসেন প্রিন্সিপাল, শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের দেখে নেয়ার হুমকি সহ নানান ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুন্ন করা ও অপর উদ্যোক্তা ড. ইমরান চৌধুরীকে নিয়ে মনগড়া কাহিনী তৈরী করে সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে অপ-প্রচার চালাচ্ছে বলে শিক্ষকরা জানান।

সর্বশেষ অন্তবর্তীকালীন সরকার ২০ আগস্ট মঙ্গলবার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের সকল বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতিদের জন্য নতুন পরিপত্র জারি করে। ঐ পরিপত্রে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও মহানগর পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। অধ্যক্ষ জানান, পরিপত্র অনুযায়ী বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনার এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন, তাই কোনো প্রকার মিথ্যা বা হয়রানী মূলক কার্যক্রম যদি কেউ প্রতিষ্ঠানে বসে পরিচালনার চেষ্টা চালায় না পারে সে বিষয়টিও বিভাগীয় কমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম সহ সাধারণ শিক্ষকরা জানান, ২০০৩ সালে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বরিশালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১২টি টেকনোলজির মাধ্যমে দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের একজন উদ্যোক্তা আমির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ-ব্যবহার অব্যহত রেখেছেন। তার অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার ফলেই জেলা প্রশাসক প্রতিষ্ঠানটিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মানুযায়ী সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ যথাসময়ে বেতন-ভাতা পাওয়ায় এবং আমির হোসেন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দখল করতে না পারায় এখানে এসে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সাথে আরো বেশি খারাপ আচরণ, গালাগালি করা শুরু করে এবং অদ্যবধি তার খারাপ আচরণ অব্যহত রেখেছেন এবং প্রতিষ্ঠানজুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছেন এবং বহিরাগত অপরিচিত লোকজনকে প্রতিষ্ঠানে নিয়ে এসে উৎকণ্ঠার সৃষ্টির কারণে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার সহ সংশ্লিষ্টদের লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে।

ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এম.এ. রহিম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তাগণ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবে। অধ্যক্ষ সহ শিক্ষকরা জানান, বিভাগীয় কমিশনার সভাপতি হওয়ায় জেলা প্রশাসকের ন্যায় বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম শৃঙ্খলা অব্যাহত থাকবে কেননা এ প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

শিক্ষকরা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে দুই জন উদ্যোক্তা রয়েছেন কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বাইরে তারা আর কারও দখলবাজি মেনে নিবে না।

শিক্ষকরা জানান, আমির হোসেনের গুন্ডা বাহিনী তাদেরকে নানান ভাবে ভয়ভীতি দেখানোর ফলে তারা আতংকিত ভাবে জীবন-যাপন করছেন। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একাধিক নারী শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, তাদের সাথে উদ্যোক্তা আমির হোসেন অত্যান্ত দুব্যবহার করেন। তার আচরণে তারা এ প্রতিষ্ঠানে নিত্যকার্য করতে সব সময়ে ভয়ে থাকেন তাছাড়া তাদেরকে নানান ভাবে ভয়ভীতি দেখানোর ফলে প্রতিষ্ঠানের বাইরে সার্বক্ষনিক আতংকিত থাকেন। তারা দাবী করেন এ প্রতিষ্ঠানে আমির হোসেন আসলে তারা চাকুরী থেকে নিজেরাই অব্যহতি নিবেন। এদিকে, বরিশাল ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’র উদ্যোক্তা আমীর হোসাইনের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

রবিবার সকালে কশিপুরস্থ ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা ক্যাম্পাসের সামনের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের উপর গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা এসময় সেনাবাহিনীর আশ্বাসে সড়ক ছেড়ে ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।

পরে সেনাবাহিনীর আশ্বাসে বিক্ষোভ থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলে সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করে।

কেউ প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষকদের চাকুরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ, প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানান অনিয়ম করে আসছেন তিনি। এসময় শিক্ষার্থীরা আরো জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের উপর অত্যাচার করেন এমনকি সেমিষ্টার ফি’র টাকা কম বেশি করলেও অনেক ঝামেলা করে।

আমাদের কোন মূল্যই দেয়না তিনি। আমাদের ক্যাম্পাস শান্তিপূর্ণ করতে হলে আমির হোসেনকে অপসারন করতে হবে। আমরা অন্য স্যারের পদত্যাগ চাইতে পারতাম কিন্তু আমরা তা করিনি কারন অন্য স্যারদের সাথে আমাদের কোন সমস্যা নাই অন্য স্যাররা ডিসি স্যারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলে কিন্তু আমির হোসেন তা মানে না। তিনি আমাদের ও শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে।

আর শিক্ষকদের হয়রানি করলে তারা কর্মবিরতী দেয় আর তাতে আমাদের ক্ষতি হয়। শিক্ষকরা কর্মবিরতীতে গেলে আমাদের পড়া লেখায় ক্ষতি হয়। আমাদের ৬ মাসে সেমিষ্টার সেখানে যদি ক্লাস বন্ধ যায় তাতে তো আমরা পিছিয়ে পরি। যাতে আমাদের ক্ষতি হয় এ ক্ষতি আমরা কিভাবে পুষিয়ে নেব? এর আগে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গেছি তাতে আমাদের পড়া অনেকটা পিছিয়ে গেছে।

যেখানে আমারা সারা দেশের বৈষম্য দূর করি সেখানে আমাদের ক্যাম্পাসেই বৈষম্য রয়ে গেছে। আমাদের অভিভাবক বিভিন্ন যায়গায় থাকে এখানে আমাদের অভিভাবক শিক্ষকরা আর আমাদের শিক্ষকদের সাথেই যদি এমন করা হয় তাহলে আমরা সেখানে কিভাবে থাকি। আমরা চাই অতি দ্রুত তাকে অপসারন করা হউক।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD