রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১১ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেক্স : বরগুনার আলোচিত রিফাত কুপিয়ে রিফাত শরীফকে খুনিদের ধরা হবে- এই নিশ্চয়তা দিয়ে কিছুটা সময় চাইলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিসহ সাতজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা একটু সময় দেবেন তো আমাদের। আমার মনে হয় আমরা ধরে ফেলব।
গত বুধবার বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে। এই ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ছড়িয়েছে। স্থানীয় যুবক নয়ন বন্ড এবং রিফাত ফরাজী নামে দুই জনের নেতৃত্বে এই হামলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভিডিও দেখে তারা মোট ১৩ জনকে শনাক্ত করেছেন।
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এই ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কারো কোনো গাফলতি পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘এজাহারভুক্ত ১২ জন, আমরা শনাক্ত করেছি ১৩ জন। আরও কয়েকজন আমাদের নেটের ভেতর চলে আসবে, তারা নানাভাবে সহযোগিতা করেছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে চলে আসবে। এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত তিনজন রয়েছেন।’
ঘটনাটিকে নৃশংস হত্যা আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে কুপিয়ে হত্যা করার দৃশ্য আমরা অনেক আগে দেখেছিলাম, বিশ্বজিৎ হত্যা। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার প্রক্রিয়াধীন। আমরা ওই একটি ঘটনা দেখেছিলাম। সেদিনও বাংলাদেশের মানুষের মনে দাগ কেটেছিল। আজকে সেই রকম নৃশংস হত্যা।’
‘কোপানো এটা কারো কাম্য নয়। যদি কোনো গাফিলতি এখানে থাকে… দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ছাড়াও আরও ঊর্ধ্বতন অফিসাররা সেখানে আছেন, কারো গাফিলতি যদি থাকে নিশ্চয়ই এটার ব্যবস্থা আমরা নেব।’
পুলিশ যাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে, তাদের মধ্যে মো. সাগর এই হত্যার একজন পরিকল্পনাকারী বলে শনাক্ত হয়েছে। তিনি পুলিশে নিয়োগের চেষ্টা করছিলেন। কনস্টেবল পদের জন্য নিয়োগে তার কেবল স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাকি ছিল।
এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান খানিকটা মজা করে বলেন, ‘একটা ভালো কাজই করেছে, পুলিশের চাকরি খুঁজছে, এখন আর হবে না। এ ধরনের অপরাধ করলে নিয়োগ হবে না।’
রাজনৈতিক প্রশ্রয় পেয়ে তারা এমন অপরাধী হয়ে উঠেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে -এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক নেতাকে ছাড় দেই না। আমরা কাউকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ধরি না, তাকে অপরাধী হিসেবেই ধরি। কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় আমরা কাউকে দেই না।’
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটছে কি না- এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘বিচার বিভাগ সম্বন্ধে আমার কিছু বলার নেই। আমাদের কাজ যেটি আমরা সেটি করে দিচ্ছি। বিচার বিভাগ স্বাধীন, সেই বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
এই ধরনের খুনের পেছনে মাদকের বিষয়টি চলে আসে- এমন প্রশ্ন করলে জবাব আসে, ‘আপনি যতকিছু খুঁজতে থাকবেন দেখবেন এর পেছনে মাদকের একটা শক্তি রয়েছে। মাদক যারা সেবন করেন তারা তাদের মনুষ্যত্ব হারান, তাদের বিবেক-বুদ্ধি সব লোপ পায়। তারা নানা রকম রোগশোকেও ভুগতে থাকেন।’
‘যারা এর ব্যবসা করেন তাদের অবৈধ ব্যবসা রক্ষা করতে হলে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করতে হয়। এই ইয়াং ছেলেরা কতখানি জড়িত হয়েছে, পত্রপত্রিকায় আমরা শুনছি, আমরা সেটা দেখছি। তারা যদি জড়িত হয়ে থাকে কিংবা আরও কারা আছে সবাইকে আমরা ধরব। মাদকে আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছি এখানেও চালাব।