শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেক্স : খুলনায় দুর্বৃত্তদের কোপের আঘাতে মারাত্মক আহত কিশোর শাহিনের অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা কিশোরটি এখনো চোখের পাতা মেলতে পারেনি।
ছেলেটিকে আরো ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন চিকিৎকরা। তাকে দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতালের নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
শাহিনকে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা হয় খুলনা থেকে। তার অবস্থা তখনই ছিল সঙ্গীন। সাতক্ষীরায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনায় হয় তার চিকিৎসা। আরো উন্নত সেবার জন্য তাকে পাঠানো হয় ঢাকায়। ঢাকা মেডিকেল ভর্তির পর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টাতেও চোখ মেলে তাকায়নি ছেলেটি।
১৪ বছরের এই কিশোর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ভ্যান চালিয়ে আয় করত। যাত্রীবেশে কয়েকজন ভ্যানটি ভাড়া নেয়। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ছিল অসৎ। নির্জন স্থানে ছেলেটিকে মেরে ভ্যানটি ছিনিয়ে নেয়। আর রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ছেলেটির রক্তে যেন নেয়ে গিয়েছিল। তাকে পেটানো হয়েছে, কোপানো হয়েছে ধারালো অস্ত্রে। আর এই রক্তাক্ত দেহের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শাহিনকে হাসপাতালে দেখতে গেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন তার চিকিৎসার যেন কোনো ত্রুটি না হয়। এ জন্য ব্যয়ও করা হবে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে।
শনিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে তাকে ঢাকা মেডিকেলে আনার পর রাত সাড়ে ১২টায় অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। চলে রাত সোয়া তিনটা পর্যন্ত। অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে আনা হয় আইসিইউতে।
শাহিনের চাচা মনসুর আলী মোড়ল জানান, ‘ডাক্তার জানিয়েছে, ও এখন আগের চেয়ে ভালোভাবে নিশ্বাস নিতে পারছে। তবে এখনও কথা বলার মতো অবস্থায় তার নেই। ডাক্তরা বলছে, ধৈর্য ধরতে। শাহিন সুস্থ হতে আড়াই-তিন মাসের মত সময় লাগতে পারে।’
শাহিনের বাবা বাবা হায়দার আলীও ভ্যানচালক। তারা যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট এলাকার বাসিন্দা। একার আয়ে সংসার চলে না বলে ছেলেকেও ভ্যান চালাতে দিয়েছিলেন। আর সেটাই কাল হয়েছে তার জন্য।
শাহিন হত্যা চেষ্টার ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানায় মামলা হয়েছে। তবে কারা সেই দুর্বৃত্ত, সেটি মামলায় উল্লেখ করার সুযোগ ছিল না। আর পুলিশও এখনো শনাক্ত করতে পারেনি অপরাধীদের। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাউকে আটকও করতে পারেনি পুলিশ।