সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
এস আল-আমিন পটুয়াখালী: বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক নেছার উদ্দীনের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব ও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করা এক শিক্ষার্থী (১৬). এনিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন মিয়ার। এছাড়া ও তার বিরুদ্ধে খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থীর অভিযোগে বলা হয়, খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক নেছার উদ্দীনের নিকট ২ বছর যাবত প্রাইভেট পড়ছে। বহুদিন যাবত বিভিন্ন বচন ভঙ্গি ও কথার মাধ্যমে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। ২০২৩ সনের পরীক্ষার প্রাটিক্যাল খাতা আটকে রেখে একান্ত ভাবে বাসায় দেখা করার কুপ্রস্তাব দেয়।শিক্ষকের এমন অনৈতিক আচরনে শিক্ষার্থী দিনরাত মানষিক ভাবে নির্যাতন হচ্ছে।
শিক্ষকের ভয়ভীতি ও কুপ্রস্তাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।এদিকে প্রধান শিক্ষক মিলন মিয়া কারো সঙ্গে কোন আলোচনা ছাড়াই এককভাবে অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে গোপনে বিষয়টি মিমাংসা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এনিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক বৃন্দ, শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও অত্র এলাকার সচেতন বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সকলেই অনৈতিক আচরনের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নেছার উদ্দীনের বহিষ্কার দাবি করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক নেছার উদ্দীন সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ক্লাস থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করে ও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নাসির হাওলাদার বলেন, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ২ লক্ষ টাকার লেনদেন করা হয়েছে। আমাকে ও জুয়েলকে চুপ থাকার জন্য সাবেক মেম্বারের ছেলে দেলোয়ার মুন্সির মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
রাজি না হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে বিভিন্ন অসামাজিক লেখা পোস্ট করে সম্মানহানির ঘটনা ঘটায় এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন তিনি। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে অর্থনৈতিক লেনদেন করে অবৈধভাবে খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন নেছার উদ্দীন। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মিলন মিয়া মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি এনিয়ে কোন মিমাংসা করেনি। অভিযোগকারী একটা মিমাংসা পত্র দিয়েছেন। এখানে কোন লেনদেন হয়নি বিষয়টি আমরা দেখবো।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া বলেন, অভিযোগ তদন্তে রয়েছে আগামীকাল ১’লা জুন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, এধরণের ঘটনা সত্যি ন্যাকারজনক বিষয়টি সত্য মিথ্যা যাচাই করে সঠিক অপরাধের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বিদ্যালয়ের মান হারাবে এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর আস্থা হারাবে অভিভাবকদের।
এনিয়ে শিক্ষার্থীর বক্তব্য মায়ের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন তাদের সঙ্গে মিমাংসা হয়েছে। তার মেয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। কিছুক্ষণ বাদেই বক্তব্য ঘুরিয়ে ফেলেন বলেন বিভিন্ন মানুষের চাপে পড়ে মিমাংসার জন্য অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বলে জানান।
পরে শিক্ষার্থীর বক্তব্য নিতে তার শশুর বাড়িতে গেলে ঘরে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়৷ প্রতিবেশীদের বক্তব্য মতে প্রতিবেদকের উপস্থিতির কিছুক্ষণ আগে ঘরে তালা বন্ধ করে বাহিরে বেড়িয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীর স্বজন বলেন তাদের ভয়ভীতি দিয়ে চুপ করানোর চেষ্টা চলছে এজন্য হয়তো পালিয়ে রয়েছে।তবে শিক্ষকের এমন অনৈতিক আচরনের ঘটনায় কঠোর বিচার হওয়া উচিত বলে দাবি করেন।