বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ এর বিরুদ্ধে হত্যা মামলার পর আদালতের নির্দেশে মৃত মাকসুদুর রহমান এর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঘটনার ৪১ দিন পর উত্তোলন করেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ।
মঙ্গলবার ১৮-অক্টোবর সকালে পটুয়াখালী পৌরসভার কবরস্থান থেকে লাশ তোলার পর পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে।
লাশ উত্তোলনের তদারক ছিলেন, পটুয়াখালীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান, এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি, পটুয়াখালী সদর থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম এবং মামলার বাদী এনাম হক ওরফে নাসির। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এর আগে ৩’রা অক্টোবর মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ থাকা সত্বেও পটুয়াখালী হাসপাতালে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের কোনো চিকিৎসক না থাকায় লাশ উত্তোলন করা হয়নি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিষয়টি পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন এস এম কবির হাসান ওই দিন লিখিতভাবে আদালতকে অবহিত করার পর গত ৬ অক্টোবর আদালত শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশটি ১৫’ই অক্টোবর শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান লিখিতভাবে হাসপাতালের অধ্যক্ষকে জানান।
পরে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহীন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অনুযায়ী মৃত মাকসুদুর রহমান এর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার রেফায়েতুল হায়দারকে নির্দেশ দেন। ডা. রেফায়েতুল হায়দার বলেন, ‘সকাল ১০টার মধ্যে ময়নাতদন্ত শুরু করতে হয়। মঙ্গলবার সকালে কবর থেকে মৃতদেহ উত্তোলনের পর পটুয়াখালী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার লাশ বরিশালে এনে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী গত ৬ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী পৌরসভার সুতাখালী খাল পরিদর্শন করা কালীন সময়ে মাকসুদুর রহমান তালুকদার ও পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ এর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে চেয়ারম্যানের সামনেই পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ ও তার লোকজন মাকসুদুর রহমানকে হুমকি দেন। এসময় মেয়রের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় মাকসুদুর রহমান এর ভাতিজা এনামুল হক ওরফে নাসিরকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করে।
ওই ঘটনার পরেই মাকসুদুর রহমান তালুকদারের লাশ পাওয়া যায় খালের পারের শ্মশানের ভেতর।পরে থানায় হত্যা মামলার জন্য গেলে ভুক্তভোগী পরিবার সেখানে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার এমন বর্ননা দিয়ে পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ সহ ১০/১২ অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে ১৫’ই সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ভাতিজা এনামুল হক।
বিচারক মো. আশেকুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে লাশ কবর থেকে উত্তোলন পুর্বক ময়নাতদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন সিআইডি পুলিশকে। উক্ত প্রধান আসামি করা হয়েছে পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ, অপর আসামিরা হলেন পৌরসভার কাউন্সিলর এস এম ফারুক, মো. এনামুল, মো. নিজাম, অপু শিকদার, আমিনুল ইসলাম মামুন। এ ছাড়া আরো ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।