মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০১:৩৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: কথা রেখেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।
গত ৩১ তারিখ তিনি ঘোষনা দিয়েছিলেন মাত্র ৭ দিনের মধ্যে কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই বিদেশগামীদেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের হাতে পৌছে দেবেন।
কিন্তু ৭ দিন নয় ঘোষনা দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনজনের হাতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সার্টিফিকেট তুলে দেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।
সোমবার নগরের আমতলার মোড় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তুলে দেওয়ান হয়।
এসময় মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দুর করতে আমরা এই পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। যারা সেবা প্রতাশি তারা আমাদের কাছে আবেদন করবে আবার আমাদের কাছ থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের কপি বুঝে নেবে। আজকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আমরা তিনজনকে দিয়েচে আরো ৩০ জনকে দেওয়া হবে। তিনি বলেন আমরা ৭ দিনের সমড নিয়েছিলাম কিন্তু তার আগেই তিনদিনের মধ্যে দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই ধারাবাহিকতা চালু থাকবে। এতে সাধারন মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, আগে মানুষ পুলিশকে ফোন করে খোজ নিত কিন্তু এখন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন হলে পুলিশ তাদের ফোন করে জানাবে।
তিনি বলেন, গরীব মানুষগুলো যেন সহজে পুলিশি সেবা পায়। তারা যেন হয়রানির শিকার না হয়, বিদেশগামীদের যেন থানায় বারবার যেতে না হয় সেলক্ষেই আমাদের এই উদ্দোগ।
তিন দিনের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়া একজন মো. সাইদ খান। তিনি বরিশালের পূর্ব রহমতপুর এলাকার বাসিন্দা।
চাকুরীর জন্য সৌদি যাবেন তাই তার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন ছিল। জানতে চাইলে সাইদ খান বলেন, আমি ৩১ তারিখে আবেদন করি। তিন দিনের মধ্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাবো তা কোনদিনই ভাবিনি। এই সেবা পেতে আমাদের আগে অনেক ভোগান্তি আর টাকা খরচ করতে হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পুলিশ কমিশনার স্যার আমাদের যে কথা দিয়েছেন তা রেখেছেন। আমি এর জন্য খুবই খুশি।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়া মোসা. সালমা বেগম জানান, আমি কানাডা যাওয়ার জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আবেদন করি। এতে আমার চালান কাটার জন্য মাত্র ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। আর তিন দিনের মধ্যেই আমাকে ফোন করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের কপি নিতে ডাকা হয়েছে। আমার কাছে এটা স্বপ্নের মত মনে হয়েছে।
নগরীর বাংলা বাজার এলাকার মাসুরা হক তার ছেলেকে পড়াশুনার জন্য বিদেশে পাঠাবো। তাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করি। আগে যে দূভোগ আমাদের পোহাতে হয়েছে তা কল্পনার বাইরে। আমি পুলিশ কমিশনারের কাজকে সাদুবাদ জানাই।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রদান কালে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সিএসবি) রুনা লায়লা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের আমতলা মোড় রোডস্থ বিএমপি কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়ে ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিসের উদ্ধোধন করা হয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, শুধুমাত্র সরকারি ফি পাঁচশ’ টাকা ছাড়া অন্য কোনো টাকা খরচ করতে হবে না।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক জনগণকে প্রদত্ত এক ধরনের সেবা। সাধারণত চাকুরি বা উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশ গমণের ক্ষেত্রে/বিদেশে অবস্থানরত ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়।
ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিসে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে- প্রথমে প্রার্থীকে সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, বরিশা-এর কোড নং
১৭৩০১০০০১২৬৮১ তে ৫০০ (পাঁচশত) টাকার ব্যাংক ট্রেজারি চালান সংগ্রহ করতে হবে। পরে ব্যাংক ট্রেজারি চালান কপি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিস ডেক্সে উপস্থিত হলে নির্দিষ্ট অফিসার কাগজপত্র স্ক্যানার মেশিন দিয়ে স্ক্যান করে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। তিনি আবেদন দ্রুত সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ আবেদনকারীকে জানিয়ে দেবেন এবং উক্ত নির্ধারিত তারিখেই প্রার্থীকে তা দিতে হবে। যদি কোনো প্রার্থী নিজেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে চান সেক্ষেত্রে উপ-পুলিশ কমিশনার (নগর বিশেষ শাখা), বিএমপি, বরিশাল কার্যালয়ে হাজির হয়ে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে তা সংগ্রহ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, আগে যেখানে বিদেশগামী বা বিদেশ পড়ালোখার জন্য শিক্ষার্থীদের বেলায় সংশ্লিষ্ট থানার পাশাপাশি এই প্রত্যয়নপত্রের জন্য পরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পর্যন্ত যেতে হতো এখন আর তা প্রয়োজন হবে না। কেবল বিদেশগামী বা শিক্ষার্থীদের বেলায় নয়; পুলিশের সব ধরনের প্রত্যয়ন পত্রের জন্য এবার পুলিশ কমিশনার অফিসে একটি বুথ খোলা হয়েছে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, অনেক সময় অপরাধীরা দেশে গুরুতর কোন অপরাধ/সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে বিদেশে পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হওয়া যায়। বিদেশ গমনে ইচ্ছুক কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা চলমান আছে কিনা পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে তা জানা যায়। এছাড়াও বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় ওয়ার্ক পারমিটপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক সময় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হয়।