রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে দেশের অর্থনীতির ড্রাইভিং সিটে (চালক) বসবে প্রাইভেট সেক্টর। যারা টাকা-পয়সা নিয়ে বিদেশে চলে গেছে, তাদেরকেও ফেরত আনা হবে।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ড্রাইভিং সিটে বসবে প্রাইভেট সেক্টর। আপনারা মাঝে মধ্যে বলেন, টাকা-পয়সা নিয়ে চলে গেছে। বিদেশে নিয়ে গেছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বিশ্বাস করি, তাদেরকে আবার ফেরত পাব।’
প্রাইভেট সেক্টরকে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আভাস দিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যদি সুযোগ-সুবিধা পায়, কস্ট অব বিং বিজনেস কম রাখতে পারি, ইউজ অব বিং বিজনেস আমরা যদি ভালো রাখতে পারি, এতে শুধু দেশীয় বিনিয়োগই না, বিদেশের অনেক বিনিয়োগও পাব। যেটা কল্পনাও করতে পারিনি।’
বাজেটের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেট তো শুধুমাত্র আমাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব না। অবস্থান বিবেচনা করে বাজেটে এ বছরে কত থাকবে, আগামী বছর কত থাকবে এবং আগামী পাঁচ বছর পরে কী হবে, তার কথা থাকবে।’
দেশে বাজেটের বড় বিষয় হলো, রাজস্ব আহরণ। এ ক্ষেত্রে আপনার কী ধরনের পদক্ষেপ থাকবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ট্যাক্স জিডিপির রেশিও অনেক কম। আমাদের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করতে হবে। সেটা বৃদ্ধির জন্য সবাইকে করের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। খুব দ্রুত এটা নিয়ে বসব। দুই-তিনটা মিটিং করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
‘কোন খাতে কত রেট করলে ম্যাক্সিমাম (সর্বোচ্চ) রেভিনিউ জেনারেট করতে পারব। কিন্তু কাউকে হার্ম (ক্ষতি) করলাম না, যারা ট্যাক্স দিবে না, তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, আহত না করে, কতটা ট্যাক্স আদায় করলে মঙ্গলজনক, সেই কাজটি আমরা করব’, বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এক দিকে ট্যাক্স বেশি আহরণ করতে হবে, আরেক দিকে করের হার
কমাতে হবে। যদি করের হার কমালে আহরণ বেশি হয়, তাহলে সে কাজটি আমরা করব।’
এক সাংবাদিক বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতি বলছে, ২০৩৩ সালে বাংলাদেশ বিশ্বে ২৪তম
শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হবে। কিন্তু দেশের অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন,
দেশের অর্থনৈতিক খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও সুশাসন নিশ্চিত করা বড়
চ্যালেঞ্জ।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এরা সবসময় আশঙ্কার কথা বলে, আতঙ্কের কথা বলে। ঝড়ঝাপটার কথা বলে, টাইফুনের কথা বলে। আর ভূমিকম্পের কথা বলে। এরা স্বপ্নেও ভূমিকম্পের কথা বলে। এরকম চিন্তা করলে কেউ কিছু করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলব, আপনারা আমার কথা শোনেন। জিতবেন। আমি অন্যদের কথা জানি না।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘একটি জায়গায় আমাদের বিতর্ক চলছেই যে, আর্থিক খাত খারাপ। আর্থিক খাতের অবস্থা ভালো না। আমার বিশ্বাস, এটা ততটা খারাপ না। ততটা খারাপ হলে অর্থনীতিতে এ গতি থাকত না।’
‘যদি কোনো দেশের আর্থিক খাত এতই খারাপ হবে, ব্যাংকিং খাত ততই খারাপ হবে অথবা ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর ততই খারাপ হবে, যেভাবে বলা হচ্ছে। ততটা খারাপ হলে দেশের অর্থনীতির গতি আসে কোথা থেকে? উন্নয়ন কেমন করে হয়, জিডিপির প্রবৃদ্ধি কেমন করে হয়, এটা হতে পারে না। আমার বিশ্বাস, কিছুটা হয়তো ব্যত্যয় থাকতে পারে। কিন্তু যেভাবে শুনি, সে রকমভাবে হয়তো নাও হতে পারে। যদি থাকে আমরা সিদ্ধান্ত নেব কীভাবে সমাধান দিতে পারি। সমাধান তো অবশ্যই দিতে হবে’, বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে সংস্কার। আমরা যেসব জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে হাত দেইনি। অনেক আইন আছে, ২০১৩ সালের আইন, ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত। সেগুলা এখন ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশন চলমান। এ বিপ্লবে সেসব আইন কতটা চলমান।’
আরও কয়েকটি ব্যাংক আসছে, এটাকে আপনি স্বাগত জানাচ্ছেন কি-না জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি তো অবস্থান জানি না। আমাকে ওখানে যেতে হবে। না যাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কথা কেমন করে বলি।’