বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
বরিশাল মহানগর যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় সরকারি এম বি কলেজ মাঠ উন্মুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে সংরক্ষিত বনের বালু উত্তোলন, হুমকিতে সবুজ বেষ্টনী বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, উপকূলে গুমট পরিবেশ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রাস্তা সহ বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন এলজিইডির টিম বাউফল নারীর বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে ৮দিনের অভিযানে ১৯ জেলে আটক, প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মিটার জাল জব্দ বাংলাদেশ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদ বরিশাল মহানগরীর প্রতিনিধি সমাবেশ কলাপাড়ায় নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটায় এক লাখ টাকা জরিমানা কুয়াকাটা পৌর বিএনপির অফিস ভাংচুর মামালায়, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সহ ৪ জন জেল হাজতে ডাকাত বাহিনীর প্রধান ২০মামলার আসামী জুয়েল মৃধা গ্রেপ্তার  কলাপাড়ায় এইচএসসিতে মহিপুর  মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ এগিয়ে ৫ দিন পাঞ্জা লড়ে মৃ-ত্যুর কাছে হার মানলেন সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম উপকূলের শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিযোগিতা মহিপুরে অর্থের অভাবে অন্ধ হতে বসেছে শিশু তাওহিদ, সাহায্যের আবেদন
ভোটের মাঠে ‘হিট আউট’

ভোটের মাঠে ‘হিট আউট’

Sharing is caring!

ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক:
ভোটের মাঠে লড়াইয়ে নামার আগেই নিজের দোষ-গাফিলতিতে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীর। লড়াই জমার আগেই যেন শেষ হয়ে গেলো। বিএনপি-জাতীয়পার্টিসহ বিভিন্ন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভাগ্য ঝুলছে এখন আপিলের ফলাফলের উপর।

রোববার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বড় বড় নেতার মনোনয়নপত্র বাতিলের মধ্যদিয়ে ধাক্কাটা শুরু হয়। ঢাকা-১ আসনে বিএনপির একজন প্রার্থীও টেকেননি। ফলে ভোটের লড়াইয়ের আগেই একটি আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনীত প্রার্থী বিজয়ের পথে এগিয়ে গেলেন এক ধাপ। যদিও আসনটিতে এখনো মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচিত হয়নি।

সেক্ষেত্রে কে হচ্ছেন এই আসনে আগামী দিনের আইনপ্রণেতা তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কেননা ওইদিন মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেদিন যদি আওয়ামী জোটের একক প্রার্থী থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে আবারও বিনা ভোটে আইনপ্রণেতা হতে যাচ্ছেন জোটের কেউ।

এখানেই শেষ নয়, যাদের মনোয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তাদেরও সুযোগ থাকছে। এই পর্বে যারা বাতিল হয়েছেন তারা আবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আপিল করতে পারবেন। আগামী ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল করা যাবে। এরপর ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি হবে। সেক্ষেত্রে যাদের ছোটখাটো ভুল রয়েছে সেগুলো মার্জনা করে ফের প্রার্থিতা বহাল রাখার সুযোগও থাকবে।

যদি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আপিল করেও প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেখান থেকে নিষ্পত্তি হওয়ার পরে কেউ যদি আবার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সেক্ষেত্রে আপিল বিভাগে আবেদনের পর নির্বাচিত হওয়ার পরেও প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ রয়েছে আইনে।

প্রাথমিকভাবে প্রথম পর্বেই মাঠের বাইরে চলে গেলেন অনেক বড় বড় নেতা, আলোচিত মুখ। বাদের তালিকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে, মন্ত্রী, এমপিও রয়েছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারন খালেদা জিয়ার ফেনী-১ (ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম) আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজার কথা উল্লেখ করে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার (২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান তা বাতিল ঘোষণা করেন।

শুনানির সময় তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দু’টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ অনুযায়ী তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। খালেদা জিয়া ফেনী ছাড়াও বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। একই কারণে সেই আসন দু’টিও বাতিল করা হয়েছে। যদিও বগুড়া-৬ থেকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর টাঙ্গাইল-৮ আসনের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে। তার বাতিলের কারণ দেখানো হয়েছে ঋণখেলাপি। এরআগেও এই আসনে দশম সংসদের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তখনও একই কারণে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

ঢাকা-১ আসনে ধানের শীষে কোনো প্রার্থীই আর টিকে নেই। এখানে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থীর মনোনয়নই গ্রহণ করা হয়নি। এই আসনে বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ফাহিমা হোসাইন জুবলী ও নাজমুল হুদার সাবেক প্রেস সেক্রেটারি তারেক হোসেন। এদের কারও মনোনয়নই টেকেনি।

প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন পটুয়াখালী-১ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী, দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার।

মামলার কারণে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মো. নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে মীর মো. হেলাল উদ্দিনের চট্টগ্রাম-৫ আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ফলে এখানেও ধানের শীষের প্রার্থিতা সংকট দেখা দিয়েছে।

শুধু এমপি হওয়ার জন্য শেষ মুহূর্তে দল পরিবর্তন করে বিএনপিতে যোগ দেন টক শো’র আলোচিত মুখ গোলাম মাওলা রনি। যিনি গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ডিএনসিসিতে মেয়র আনিসুল হকের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করে ১৮৬১ ভোট পেয়ে জামানত হারান। এবার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষে ভোট করার সিদ্ধান্ত নেন।

তবে এতো দৌড়াদৌড়ির মধ্যে নিজের হলফনামায় স্বাক্ষর করতেই ভুলে গেছেন সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা। যে কারণে তার মনোননপত্র বাতিল করা হয়েছে। একই কারণে হবিগঞ্জ-১ আসনের নৌকার প্রার্থী সাবেক সংরক্ষিত সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে।

এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে ঋণখেলাপির কারণে। হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় বাদ পড়েছেন মহাজোটের আরেক প্রার্থী বর্তমান এমপি ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টির হুইপ সেলিম উদ্দিন। তিনি সিলেট-৫ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের সৃষ্টি হয়। সেই গণজাগরণ মঞ্চ থেকে আলোচনায় আসেন ডা. ইমরান এইচ সরকার। যিনি পরবর্তীতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের মেয়েকে বিয়ে করে পুনরায় আলোচনায় আসেন। এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। আইনে আছে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে তাকে ওই আসনের মোট ভোটার কমপক্ষে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে ইমরান এইচ সরকার সেই শর্ত পূরণ করেননি। ফলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

একই কারণে বগুড়া-৪ আসনের তারকা আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি যে ভোটারদের তালিকা জমা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে তিনজন ভুয়া ভোটার ছিল। ঋণখেলাপির কারণে বাতিল হয়েছে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের মনোনয়ন।

এই তালিকা আরও দীর্ঘ। তবে এদের কেউ হয়তো আপিলে টিকে যাবেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় বিশেষ করে যাদের দুই বছরের বেশি সাজা আছে তাদের মনোনয়নপত্র শেষ পর্যন্ত নাও টিকতে পারে। চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD