মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুর্বল ও শক্তিহীন করতে পিলখানা ট্র্যাজেডি। যার দোষ চাপিয় দেয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ রাইফেলস’ (বিডিআর) বিদ্রোহের কারণ উল্লেখ করে। মূলত এটি সঠিক নয়। ভারতের পক্ষ হয়ে আ.লীগ ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের সামরিক শক্তিকে দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে পিলখানা ট্র্যাজেডি সংঘটিত করেছিল। সংবাদ সম্মেলন ও স্মারক লিপি প্রদান অনুষ্ঠানে ওই সব কথা বলেন চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, চাকুরিচ্যুত বিডিআর এনসিও- হাবিলদার মোঃ শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হতাকান্ডের ঘটনায় চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যগন আ.লীগ ফ্যাসিস্ট সরকার সেনাবাহিনীর শক্তি ক্ষুন্ন করতে বাংলাদেশ রাইফেলস কে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র পূর্বক পিলখানা হত্যাকান্ড সংগঠিত করেছে। উক্ত হত্যাকান্ডে ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা সহ ৭৪ জন শাহাদাৎ বরণ করে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট সরকার বিচারের নামে নিরীহ ৫৪ জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে এবং ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে চাকুরিচ্যুতসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। এ সময় তারা ৯ দাবী জানান- দাবীসমূহ হল-
১. ২০০৯ ইং সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী বিডিআর পিলখানা সংঘঠিত সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে তথা কথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত না করে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসাবে আখ্যায়িত করতে হবে। ২. উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে। ৩. চাকুরিচ্যুত সকল পদবীর বিডিআর সদস্যকে সুযোগ সুবিধা সহ চাকুরীতে পূর্নবহাল করতে হবে। ৪. হত্যাকান্ড মামলার মহামান্য হাইকোর্টের বিচারকগণের রায়ের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী পিলখানার হত্যাকান্ডের ঘটনার মোটিভ উদ্ধার ও কুশিলবদের সনাক্তকল্পে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। ৫. পিলখানা হত্যাকান্ডে শাহাদাৎ বরণকারী ৫৭ মেধাবী সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।
৬. ২৫ ফেব্রুয়ারী দিনটিকে পিলখানার ট্রাজেডি দিবস হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। ৭. পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা পরবর্তী তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যে সকল নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতন পূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ ও মৃত সকল পদবীর পরিবারকে ক্ষতিপূরন সহ পূর্নাবাসন করতে হবে। ৮. তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিযুক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সনাক্ত পূর্বক বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৯. বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষকারী বিডিআর সদস্যগন যারা প্রহসনের বিষ্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ কারা অন্তরীণ আছে। তাদেরকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন অথবা মামলা হতে অব্যাহতি পূর্বক মুক্ত করতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চাকুরিচ্যুত একাধিক বিডিআর বলেন, পিলখানা ট্র্যাজেডি তৎকালীন বিডিআরদের একটি গ্রুপ দ্বারা সংগঠিত বিদ্রোহের কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জনমুখে এটি ছড়িয়ে হলেও আসলে তা সঠিক নয়। পিলখানা ট্র্যাজেডির পূর্বে ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৪ বর্ডারে বিডিআর ও বিএসএফ যুদ্ধ হয়। এতে জয়ী বিডিআর। মারা যায় ১৮/২০ জন বিএসএফ। আহত হয় শতাধিক। তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত বিডিআর সদস্যরা তখন ছিল এশিয়া মহাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বর্ডার গার্ড। এই ঘটনার জের ধরেই ভারত ও আ.লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের পরিকল্পনায় পিলখানা ট্র্যাজেডি সংঘটিত হয়। যার প্রমাণ পিলখানা ট্র্যাজেডিতে সমগ্র ইউনিটের মেধাবী ও সৎ সাহসী বিডিআরদের আইনের আওতায় সাজা দেয়া হয়েছে। যারা পিলখানা এলাকার ধারে কাছেও ছিল না।
এখন ছাত্ররা নতুন করে দেশ সংস্কার করতেছে। তাই সত্য বলার সময় এসেছে। তবে পিলখানা ট্র্যাজেডিতে কারা হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে এমন প্রশে তারা (বিডিআর) বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত হলে ঘটনার মূল রহস্য বেড়িয়ে আসবে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বরিশালের বিভিন্ন জেলার প্রায় শতাধিক চাকুরিচ্যুত বিডিআর উপস্থিত ছিলেন।