রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
এস আল-আমিন খাঁন পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালী সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে ৩৫টি ভুল বানান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ভুল বানান চিহ্নিত করা প্রশ্নটি। তবে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ বলছে প্রিন্ট করতে গিয়ে ফন্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় এমন প্রশ্ন ছাপা হয়েছে। আর অভিভাবকরা বলছেন প্রশ্ন করা এবং তা ছাত্রদের হাতে সরবরাহের আগে শিক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল।
পটুয়াখালী সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মত একটি শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠলেও এবার নতুন এক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় ৬ষ্ট শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রে সৃজনশীল প্রশ্নে ৩৫টি বানান ভুল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর সেই ভুল বানানের প্রশ্ন দিয়েই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে এক ছাত্রের অভিভাবক প্রশ্নে ভুল গুলো চিহ্নিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোষ্ট করলে তা মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা।
তবে এ নিয়ে খোঁজ খবর করে জানা যায়, দিবা শাখার বাংলা শিক্ষক এস,এম আবুল হোসেন এই প্রশ্নপত্রটি তৈরী করেন। ওই শিক্ষকের দাবী তিনি ঠিক ভাবেই প্রশ্ন তৈরী করে জমা দিয়েছেন এবং তার দেয়া প্রশ্নে কোন বানান ভুল ছিল না। সহকারী শিক্ষক এস,এম আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি আমার ব্যক্তিগত কম্পিউটারে টাইপ করে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস আগে প্রশ্ন জমা দিয়েছি। আমার তৈরী করা প্রশ্নে কোন বানান ভুল ছিল না। তবে এখন যে প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে ৩৫টি বানানের আ’কার এ’কার ভুল আছে। এটা পরীক্ষা কমিটি বলতে পারবে কিভাবে ভুল হলো।’
এদিকে প্রশ্নে এমন ভুল থাকা এবং তা দিয়েই পরীক্ষা নেয়ায় বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনা। বিশেষ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাসের থেকে প্রাইভেট কোচিং এ বেশি গুরুত্ব দেয়া সহ বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার বিষয় গুলো সামনে চলে এসেছে। পটুয়াখালী শহরের সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে জুবিলী স্কুলে ক্লাস সেভেন এ পড়ে। বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের আন্তরিকতায় ঘাটতি আছে। প্রশ্ন ছাপার সময় ভুল হতে পারে, কিন্তু সেটি ছাত্রদের হাতে তুলে দেয়ার আগে ভালো ভাবে যাচাই বাছাই করা উচিৎ ছিল।
বিদ্যালয়টির ৬ষ্ট শ্রেনীর একাধিক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘৫ তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নে বানান গুলো এমন ছিল যে কোন অক্ষর দিয়ে কোন শব্দ হয়না এমন ভাবে ‘আ’ কার ‘এ’ কার দেয়া হয়েছিলো। একই শব্দের শুরুতে বহুবার ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রথমে বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়েছিল।’
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ছাপার সময় প্রেসের লোকজন ফন্ট পরিবর্তন করতে গিয়ে আকার, একার সহ কিছু ফন্ট ভেঙ্গে গেছে। এ জন্য প্রিন্টার প্রতিষ্ঠানকে জবাবহিদি করা হচ্ছে। আগামীতে এ ধরনের ভুল যাতে না হয় সে জন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। ’১৮৮৭ সালে পটুয়াখালী সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১৭শ ছাত্র রয়েছে। আর ৬ষ্ট শ্রেনীতে এ বছর পরীক্ষা দিচ্ছে ২৩৯ জন।