বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
বরিশাল মহানগর যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় সরকারি এম বি কলেজ মাঠ উন্মুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে সংরক্ষিত বনের বালু উত্তোলন, হুমকিতে সবুজ বেষ্টনী বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, উপকূলে গুমট পরিবেশ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রাস্তা সহ বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন এলজিইডির টিম বাউফল নারীর বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে ৮দিনের অভিযানে ১৯ জেলে আটক, প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মিটার জাল জব্দ বাংলাদেশ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদ বরিশাল মহানগরীর প্রতিনিধি সমাবেশ কলাপাড়ায় নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটায় এক লাখ টাকা জরিমানা কুয়াকাটা পৌর বিএনপির অফিস ভাংচুর মামালায়, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সহ ৪ জন জেল হাজতে ডাকাত বাহিনীর প্রধান ২০মামলার আসামী জুয়েল মৃধা গ্রেপ্তার  কলাপাড়ায় এইচএসসিতে মহিপুর  মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ এগিয়ে ৫ দিন পাঞ্জা লড়ে মৃ-ত্যুর কাছে হার মানলেন সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম উপকূলের শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিযোগিতা মহিপুরে অর্থের অভাবে অন্ধ হতে বসেছে শিশু তাওহিদ, সাহায্যের আবেদন
দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ওবায়দুল কাদের চরম সংকটে মা তাঁর সন্তানের জন্য যা করেন, নেত্রী তাই করেছেন

দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ওবায়দুল কাদের চরম সংকটে মা তাঁর সন্তানের জন্য যা করেন, নেত্রী তাই করেছেন

Sharing is caring!

ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তিনি ‘তাঁর’ মধ্যে ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথেও তিনি কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। তিনি ‘তাঁর’ মধ্যে না থাকলেও একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। আপামর মানুষের ভালোবাসায় সেই অবস্থা থেকে তিনি ফিরে এসেছেন।

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দুই মাস ১১ দিন পর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছালে হাত নেড়ে সমবেত মানুষকে অভ্যর্থনার জবাব দেন তিনি। এ সময় ভিআইপি টার্মিনাল থেকে দলের এবং বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষের চোখ ছিল ওবায়দুল কাদেরের ওপর।

বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশের জন্য বিকেল ৪টা থেকেই ভিড় জমে। ওবায়দুল কাদেরের আগেই ভিআইপি লাউঞ্জের দিকে আসতে থাকেন তাঁর সহধর্মিণী অ্যাডভোকেট ইসরাতুন্নেছা কাদের। বিমানবন্দরে এত মানুষের উপস্থিতি দেখে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বললেন, ‘মনে করেছিলাম দলের কিছু নেতা থাকবেন, এখন দেখি অনেক মানুষ!’

ভিআইপি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। সেখানে চেয়ারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দলের নেতাকর্মীরা মেঝেতে বসে পড়ে। সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে কথা বলা শুরু করেন ওবায়দুল কাদের।

গত ২ মার্চ ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। বক্তব্যের শুরুতেই ওবায়দুল কাদের সেই সময়ের অবস্থা তুলে ধরে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে দুই মাস ১১ দিন আগে আমার জীবন ছিল অনিশ্চয়তার অন্ধকারে। বাঁচব কি বাঁচব না—সংশয় ছিল।’ এরপর একটু থেমে আরো বললেন, ‘জীবন-মৃত্যুর সেই সন্ধিক্ষণে পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায়, আমার প্রিয় নেত্রী বলে একটু থেমে আবেগসিক্ত হয়ে বাক্য পুরো শেষ করতে পারলেন না। তারপর বললেন, এ রকম সংকটে মা তাঁর সন্তানের জন্য যা করেন নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমার জন্য তাই করেছেন। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার নেই। মমতাময়ী মা—তাঁর কাছে আমার ঋণের বোঝা বেড়ে গেল। শেখ রেহানা কোরআন শরিফ পড়ে আমার জন্য দোয়া করেছেন। দেশবাসী, জনগণ, হাসপাতালে ছুটে গেছে। আমার মধ্যে আমি ছিলাম না। কী হয়েছিল আমার, আমি বুঝতে পারছিলাম না। বিপদে আপনজন কাছে এসে ডাকে। যার ডাকে সাড়া দেয় সে-ই বেশি আপন। সেদিন শেখ হাসিনা আমাকে নাম ধরে ডেকেছেন—আমি তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছি। সারা দেশের মানুষ, দেশের বাইরের মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছেন। এক নজর দেখতে দলের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ হাসপাতালে ছুটে গেছেন। প্রবাসীরা দোয়া করেছেন।’

জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের বড় সম্পদ মানুষের ভালোবাসা। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছি। এত ভালোবাসা, এত দোয়া—আল্লাহ কবুল করেছেন। রাতের আঁধারে আমি গেছি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে। সেসব মুহূর্ত আমার অজানা ছিল। দলের বাইরে অন্যান্য দলের নেতারাও আমাকে দেখতে এসেছিলেন, দোয়া করেছেন। সাংবাদিকরা হাসপাতালে যাওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে সংবাদ কাভার করেছেন। তাঁদের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’

তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে দলের নেতাকর্মী, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও সাধারণ মানুষ উপস্থিত হয় বিমানবন্দরে।

দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা দলের টিমওয়ার্ক জোরদার করে এগিয়ে যাই। আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ করার পথে এগিয়ে যাই। আমার অনুপস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীরা সবাই একযোগে কাজ করেছেন। এটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার অনুভূতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সেদিন পাঁচ মিনিট পর হাসপাতালে গেলে কী হতো তা অনিশ্চিত ছিল। চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। দেবী শেঠী এসেছিলেন নেত্রীর অনুরোধে। আমি বঙ্গবঙ্গু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

সিঙ্গাপুর থেকে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ফিরেছেন তাঁর সহধর্মিণী ইসরাতুন্নেছা কাদের, এপিএস মহিদুল হক, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সুখেন চাকমা, ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী মনসুরুল আলমসহ ঘনিষ্ঠজনরা।

গত ২ মার্চ ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ৪ মার্চ বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে। গত ২০ মার্চ ওই হাসপাতালে তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান গত ৫ এপ্রিল।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমেদ হোসেন, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীনসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বিমানবন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

পরে গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওবায়দুল কাদের গণভবনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে।

৬৭ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ছাড়াও শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ সিওপিডিতে (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভপালমোনারি ডিজিজ) ভুগছেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD