শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৩৮ অপরাহ্ন
রিকশা ব্যতিত ও জরুরী সেবা ছাড়া সকল যান চলাচল বন্ধ থাকায় শাটডাউন উপেক্ষা করেও বরিশালের মানুষ হেটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। যাতে করে বরিশালের সড়কগুলোতে ভীর দেখা গেছে মানুষের। থ্রি হুইলার কোনো যান বাহন না চললেও রিকশার পাশাপাশি নগরী জুড়ে চলেছে প্রচুর মোটরসাইকেল। এদিকে লকডাউন কার্যকরে প্রশাসন কঠোর থাকলেও মানুষকে ঘরে আটকানো কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে এই শাটডাউনে। বৃহস্পতিবার (১লা জুলাই) সরেজমিনে বরিশাল নগরীর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক, অমৃত লাল দে সড়ক, নতুন বাজার ও ব্রজমোহন কলেজ রোড এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে প্রচুর। অলিগলিতে আড্ডাও ছিলো।
অনেকের ভাষ্য ছিলো ‘শাটডাউন দেখতে বের হইছি’। নগরীর সকল দোকানপাট বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে বাজারগুলোতে ভীর ছিলো প্রচুর। মানুষকে সচেতন করতে প্রচারণা চালিয়েছে রেড ক্রিসেন্ট এর স্বেচ্ছাসেবীরা। এদিকে বরিশালের নগরীর প্রবেশদ্বারগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো: মঞ্জুর রহমানের নেতৃত্বে নগরীর নথুল্লাবাদে চেকপোস্ট বসিয়ে অহেতুক বাইরে যারা বের হয়েছেন তাদের সতর্ক করা হয়। বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেছেন, মানুষকে সচেতন করতে আমরা কাজ করছি। এছাড়া সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে ভ্রাম্যমান আদালতের দুইটি টিম কাজ করছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো: শাহাবুদ্দিন খান বলেন, বাইরে থেকে কেউ যাতে কোনো ভাবে নগরীতে প্রবেশ করতে না পারে সেই জন্য কঠোর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে।
মানুষকে সচেতন হতে হবে, সচেতন থেকেই এই ভাইরাসের সাথে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। অপরদিকে ঝালকাঠিতে শাটডাউনের প্রথমদিনে সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেনা সাধারন মানুষ। সকাল থেকে প্রতিটি উপজেলায় টহল দিচ্ছে রযাব, পুলিশ, আনসার ব্যাটালীয়ন ও সেনা সদস্যরা। পৃথক পৃথক টহল টিমের সাথে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। ঝালকাঠি পুলিশ সুপার পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে টহল দিচ্ছে। পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমীন বলেন, করোনা সংক্রমন এড়াতে জনগনকে স্বাস্হ্যবিধি মানাতে কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না। পটুয়াখালীতে শাটডাউন শতভাগ কার্যকর করতে বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশী চৌকি।
ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন এবং মাস্ক ছাড়া যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা অথবা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হচ্ছে। তবে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়িয়ে কিছু রিকশা, অটোরিকশা বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করতে দেখা গেছে। শহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও মানুষের যথেষ্ট ভীড় রয়েছে বাজারগুলোতে। যেখানে মানা হচ্ছেনা কোন রকমের স্বাস্থ্যবিধি। পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানান, সরকারের ২১দফা নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পটুয়াখালী পুলিশ সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। শহরে প্রবেশের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসিয়ে দায়িত্বপালন করছে পুলিশ। তিনি জানান, পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী ও বিজিবিসহ কোথাও কোথাও আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। সকাল থেকে জনসমাগম কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বরগুনা শহরে লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান খোলা রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানছেনা ক্রেতা বা দোকানিদের কেউই। গণপরিবহন বন্ধ থাকলে যন্ত্রচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করছে এই জেলায়। দ্বীপজেলা ভোলায় করোনা সংক্রামন প্রতিরোধে শাটডাউনের প্রথম দিন প্রশাসন ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী কঠোর অবস্থানে মাঠে নামে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে লক্ষ্মীপুর থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ফেরি ও ট্রলারে করে শত শত যাত্রী ইলিশাঘাট দিয়ে নদী পথে ভোলায় প্রবেশ করে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকেই পায়ে হেটে বা অটো রিক্সা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল যোগে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে ভোলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ টহল দিয়েছে। এছাড়াও র্যাব পৃথক অভিযানে নেমেছে। দুপুর ১ টা পর্যন্ত ২ জনকে আটকসহ ২৩ জনকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তুু শাটডাউন উপেক্ষা করে নানা অজুহাতে শহরের মানুষকে চলাচল করতে দেখা যায়। অন্যদিকে প্রশাসনের পাশাপাশি স্কাউটের সদস্যরা করোনা সচেতনতায় প্রচারনা চালিয়েছে। অন্যদিকে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করছে বরিশাল জেলায়। গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৮৬ জন। বুধবার এই সংখ্যা ছিলো ২০৮ জন।
এই নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৭ হাজার ৮৮৬ জনে। আক্রান্ত সংখ্যায় বরিশাল জেলায় নতুন শনাক্ত ৮৫ জন নিয়ে মোট ৭ হাজার ৮৭৮ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ২০ জন নিয়ে মোট ২৪৮৫ জন, ভোলা জেলায় নতুন ৮ জন সহ মোট ২০৬০ জন, পিরোজপুর জেলায় নতুন ৮০ জন নিয়ে মোট ২২৭৫ জন, বরগুনা জেলায় নতুন ২৯ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ১৪৪২ জন এবং ঝালকাঠি জেলায় নতুন ৬৪ জন শনাক্ত হওয়ায় মোট সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৭৪৬ জন। এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, গত ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৬ জনের এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যা নিয়ে শুধুমাত্র শেবাচিম হাসপাতালেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০৭ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৫৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘এ বিভাগে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে সংক্রমণ পরিস্থিতি প্রতিদিনই অবনতি হচ্ছে। পিরোজপুরে ডেলটা ধরন শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যে বিভ