রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি : বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল মানুষের জীবিকা, খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা অধিকার-মানবাধিকার নিশ্চিত করতে খাদ্য অধিকার আইন প্রনয়ণের দাবীতে বরগুনা জেলা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করে ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ও খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), বাংলাদেশ। খাদ্যের অধিকার নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে জনমত তৈরি করা হয়। পাশাপাশি, চলমান দুর্যোগে সাধারণ মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির অধিকার ও জীবিকার দুর্ভোগগুলো জনপরিসরে তুলে ধরার মাধ্যমে অধিকার আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, ‘খাদ্যের অধিকার শুধু রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক অধিকার নয়, বরং মানবাধিকারের অংশ।
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে ২৫ এর (১) অনুচ্ছেদে, খাদ্য অধিকারের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা আছে। তবে এই অধিকার শুধু মাএ ক্ষেত্র বিশেষে জরুরি অবস্থায় খাদ্যের সরবরাহ যোগান নয়, বরং আইনী কাঠামো ফলপ্রসূ কৌশলের মাধ্যমে সকলের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা প্রদান ও সবসময় খাদ্য ও পুষ্টির সরবরাহের অধিকার নিশ্চিত করাকে বুঝায়। যেহেতু খাদ্যের অধিকার একটি মানবাধিকার, তাই নাগরিকের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর এই দায়িত্ব তখনই পালন করা সম্ভব হবে, যখন একটি ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সেটি করতে হলে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের কোন বিকল্প নেই। মো. রাসেল রানা সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে উদ্বোধক ছিলেন বিভাস কুমার দাস(যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্মকর্তা) , প্রধান অতিথি: মারিয়া আক্তার (সিভিল সার্জন বরগুনা জেলা), বিশেষ অতিথি:হাসানুর রহমান ঝন্টু(সভাপতি পাবলিক পলিসি ফোরাম, DYDF প্রধান উপদেষ্টা,বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সমাজসেবক), বিশেষ অতিথি: শাহাদাত হোসেন(পৌর মেয়র), বিশেষ অতিথি: মুশফিক আরিফ।উক্ত প্রোগ্রামে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন রাব্বি আহমেদ (সাধারণ সম্পাদক, DYDF বরগুনা), এছাড়া ধ্রুবতারার সহ-সভাপতি ইলমাত জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক তাজবিন হাসান ফাহাদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক: তাসনিয়া হাসান অর্পিতা, অন্যতম সদস্য হাফিজুর রহমান রাজসহ প্রমূখ। এ সময় বক্তারা আরো বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক ২০২০ প্রতিবেদন অনুযায়ী,১০৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫; যেখানে বাংলাদেশ ক্ষুধা সূচকে ‘গুরুতর মাত্রা’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। দেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার এবং ৪৪ শতাংশ নারী রক্তস্বল্পতায় ভোগেন।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল দুর্গম এলাকার দলিত, আদিবাসী, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও শহরের নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বেশি। করোনাকালে এই অবস্থা আর ও গুরুতর আকার ধারণ করেছে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে দেশের শহরঅঞ্চলে মানুষের ৪৭ শতাংশ ও গ্রামের মানুষের ৩২ শতাংশ খাবারের পরিমাণ কমেছে। সরকারি তথ্য মোতাবেকই দেশের প্রায় পৌনে ৪ কোটি মানুষ (দরিদ্র ২১.৮ শতাংশ) পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারতেন না। যা সরাসরি মানবাধিকারের স্খলন।