বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ অপরাহ্ন
বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় করোনা মহামারি সময়কালীন বাল্যবিবাহ ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধে গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজনদের নিয়ে সোমবার শিকারপুর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ওই গোলটেবিল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উজিরপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জাহান রুমা।
গার্লস অ্যাডভোকেসি অ্যালায়েন্স ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সহায়তায় আয়োজিত ওই গোলটেবিল আলোচনা সভায় শিকারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান, সরকারি শেরেবাংলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম ইরান, উজিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুর রহিম সরদার, বিমানবন্দর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না।
উজিরপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সরদার সোহেলের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন উজিরপুরের সরকারি শেরেবাংলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, মুলাদী ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক সাইফুল রহিম, শিকারপুর ম্যারেজ রেজিস্ট্রার (কাজী) মো. আমিরুল ইসলাম, শিকারপুর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম খান, শিকারপুর ইউপির ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আশ্রাব আলী রাঢ়ী, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য শিউলি বেগম, স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম মো. রবিউল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ ঢালী, আইনজীবী প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট সাকলান হোসেন খান, বিমানবন্দর প্রেসক্লাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আল-আমিনহাওলাদার,মানবাধিকার কর্মী লস্কর মো. আলমগীর, বিএম কলেজ শিক্ষার্থী তানিশা মুন পপি প্রমুখ।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে উজিরপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জাহান রুমা বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে করোনার মহামারি সময়কালীন দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু বাল্যবিয়ের খবর শোনা যাচ্ছে। করোনার সুযোগে সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াই গোপনে এসব বিয়ে হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। উজিরপুর উপজেলায় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান বলেন, ‘সঠিক সময়ে তথ্য না পাওয়ায় অনেক বাল্যবিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে গোপন রাখা হচ্ছে বিয়ের খবর। এমনকি পাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অনেক জায়গায় রেজিস্ট্রি ছাড়াই হুজুর ডেকে অথবা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিড দিয়ে পড়ানো হচ্ছে এসব বাল্যবিয়ে। তাই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’
ওই আলোচনা সভায় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিসহ উজিরপুর উপজেলার বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় এসময় জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের উদ্যোগে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ নীতিমালা এবং করোনাকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করা হয়।