বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন
সময়ের সাথে সাথে আধুনিক গবেষণার কারণে খরা, বন্যা ও লবনাক্ততা সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থা ও সরকারি নানান সুযোগ-সুবিধাও দিন দিন চাষীদের আবাদে আগ্রহী করে তুলছে। তাই দিনে দিনে দক্ষিনের জনপদ বরিশালেও বাড়ছে ধান ও চালের উৎপাদন।
কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী গত বছর (২০১৮-১৯ অর্থবছর) আমন, আউশ, বেরো মিলিয়ে প্রায় ২৮ লাখ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হয়েছিলো বরিশাল বিভাগে। যারমধ্যে শুধু আমন হয়েছিল প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিকটন। আর এবারের (২০১৯-২০ অর্থবছর) আমন মৌসুমে সাত লাখ ১৪ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কৃষি বিভাগের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী তিন ফসল (আমন-বোরো ও আউশ) মিলিয়ে এবারে প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টনের কাছাকাছি পৌছাবে চালের উৎপাদন। যা গত বছরের থেকে অনেকটাই বেশি।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে চলতি বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে, যা চলবে চলতি মে মাসের শেষ অব্দি। এবারে বোরো’র ভালো ফলনের কারণে উৎপাদন ছয় লাখ মেট্রিকটনের বেশি আশা করা হচ্ছে। অপরদিকে গত বছরের থেকে এবারে ৬৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আউশ ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ চলতি মৌসুমে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ ৪৪ হাজার হেক্টর, যা গত মৌসুমে ছিলো এক লাখ ৮১ হেক্টর। সে হিসেবে এবারের উৎপাদন বেশি আশা করাটাই বাঞ্চনীয়। ফলে যেখানে গত বছর চার লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিকটন আউশ উৎপাদন হয়েছিলো এবারে সেখানে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে উৎপাদন সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, বরিশাল অঞ্চলে আমন ছিলো প্রধান ফসল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুরে্যাগের বিপর্যয়ের কারণে এখানকার কৃষকরা বহুমাত্রিক ফসল চাষে যেমন ঝুকেছেন, তেমিন আমনের পাশাপাশি বোরো আর আউশ উৎপাদনেও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান ঘরে তুলতে না তুলতেই দক্ষিণের অনেক কৃষক এরইমধ্যে আউশ আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করতে নেমে পড়েছেন। আবার কৃষি বিভাগ কৃষককে বীজ ও সার প্রনোদনা দিয়েও কৃষকদের আগ্রহী করে তুলছেন।
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার কৃষক সুলতান হাওলাদার জানান, বিগত সময়ের থেকে এবারের বোরো’র আবাদে উৎপাদন ভালো হয়েছে। কাটার শ্রমিক সংকট কিছুটা থাকলেও বাজার দর ভালো। তাই এ পর্যন্ত যা কেটেছেন তা বিক্রি করে দিয়েছেন। আর সামনে যা কাটবেন তা নিজেদের খাওয়া ও বীজের জন্য রেখে দিবেন। আর গোটা দেশের মোট উৎপাদনে বরিশাল অঞ্চল বড় ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের বরিশালের উপপরিচালক তৌফিকুল আলম। তারমতে গতবারের উৎপাদনের থেকে এবারে উৎপাদন বাড়বে।