শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ পূর্বাহ্ন
দুনিয়াজুড়ে যখন সবার জন্য ঘরে থাকার পরামর্শ তখন করোনা ভাইরাসারে ঝুঁকি জেনেও জনসচেতনতা এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাচ্ছে একঝাক তরুন দীপ্ত মানুষ। পিরোজপুরের বিপদাপন্ন মানুষকে অজানা শত্রুর বিপদের হাত থেকে সচেতন করছেন তারা। পরিবার পরিজনকে ঘরে রেখে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পিরোজপুর ইউনিট এর স্বেচ্ছাসেবক হয়ে মানবতার সেবায় ব্রত হয়েছেন।
প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস যাতে মহামারি রূপ ধারন করতে না পারে সেই কারনে আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে পিরোজপুর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাহসী তরুন স্বেচ্ছাসেবকরা।
মানুষকে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতন করা এবং সড়ক,বাজার,হাসপাতাল ও জেলখানাকে জীবানুমুক্ত করার মতো জরুরী ও ঝুঁকিপূর্ন কাজগুলো করছেন তারা। বিপদের দিন পিরোজপুর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি’র স্বেচ্ছাসেবকদের পেয়ে ভরসা পাচ্ছেন সাধারন মানুষ।
পিরোজপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুল্লাহ লিটন বলেন, মানবতার সেবায় পিরোজপুর রেড ক্রিসেন্ট এর করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে সময় উপযোগী বলে তিনি অবহিত করেন। এছাড়া হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করায় স্বেচ্ছাসেবকদের পাশে থাকার আশ^াস প্রদান করেন। তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল এলাকা আমার ওয়ার্ডে। এ কার্যক্রমটা প্রয়োজন ছিল। শুধু আমার এলাকা নয় সম্ভব হলে সব ওয়ার্ডে তারা সমান ভাবে এ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে আশা রাখি।
হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীর স্বজন আরিফুল ইসলাম জানান,বর্তমান সময়ে পিরোজপুর রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট যে কাজটি করছে তা প্রশংসার দাবিদার। করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে হাসপাতাল গুলোতে সেবা নিতে আসা মানুষদের জন্য এ কার্যক্রমটি একান্ত প্রয়োজন ছিল।
এ সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত সকলেই এ কাজের প্রশংসা করে বলেন, দেশের স্বার্থে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পিরোজপুর ইউনিট এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলে তারা আশা করেন। মাঠে কাজ করায় অনেকেরই পারিবারিক বাধা আছে। আছে করোনা সংক্রমনের ভয়ও তবে সব বাধা ঠেলে দেশের এই সংকট ময় মুহুর্তে মানুষের পাশে থেকে পথ দেখানোই সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বলে মনে করেন এসব স্বেচ্ছাসেবীরা।
জীবানুনাশক স্প্রে টিম লিডার পলাশ মিস্ত্রী বলেন, দেশের দুর্যোগ কালিন সময়ে সম্পূন্য মানবিক কারনে পিরোজপুর রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট এর আমরা ৭ জন ও অতিরিক্ত আরও ৫ জনসহ মোট ১২ জন আমরা প্রতিনিয়ত এ কাজ করে থাকি।
স্বেচ্ছাসেবক সুমাইয়া আক্তার তন্নী বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারী হয়ে এ মানবীক কাজ করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। অসচেতন নারী শিশু ও প্রতিবন্ধী ও খেটে খাওয়া মানুষদের সচেতন করতে সময়ের প্রয়োজনে কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। পারিবারিক ও সামাজিক বাধা সত্তেও নিজেকে সম্পূন্য নিরাপদ রেখে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পিরোজপুর ইউনিট এর ইউনিট লেভেল কর্মকর্তা ইকবাল মাসুদ বলেন, জাতীয় সদর দপ্তরের নির্দেশনা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও রেড ক্রিসেন্ট চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ, সেক্রেটারি, নির্বাহী সদস্যদের দিক নির্দেশনায় আমরা গত ২২ মার্চ থেকে অদ্যাবদি কাজ করে যাচ্ছি। লিফলেট বিতরন, মাইকিং, অফিস সম্মুখে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, হাসপাতাল, মসজিদ, মন্দির,ঔষধ এর দোকান,জেলখানা ও ব্যাংকে জীবানুনাসক স্প্রে করা হচ্ছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পিরোজপুর ইউনিট এর সেক্রেটারি অ্যাড. সৈয়দ মো: শাহ আলম জানান, সারা দেশব্যাপী যুব রেডক্রিসেন্ট এর এই কাজে আমি গর্বিত। সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি অসহায় মানুষের কথা বিবেচনা করে জাতীয় সদর দপ্তরের নির্দেশনা পেলে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ সময় তিনি নিজেকে ঝুঁকি মুক্ত রেখে সকলকে ঘরে থাকার আহবান জানান।
দেশের যেকোন দূর্যোগ কালীন সময়ের জন্য সদা প্রস্তুত থাকেন এসব স্বেচ্ছাসেবকরা। তাদের মতো কিছু সাহসী ও সচেতন স্বেচ্ছাসেবকদের দেখানো পথে হেটে ভয়কে জয় করতে পারলে বিপদ কেটে আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরবে এই সাহসটাও ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই তারুন্য।