সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর ব্যবসায়ী সমিতি একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। পৌর ব্যবসায়ী সমিতি নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে নির্বাচনীয় মাঠ। নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনা-সমালোচনা চলছে চায়ের টেবিল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। কে হতে চলছে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। ১৫ জুলাই (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কলাপাড়া উপজেল পৌরশহরের বাজার ব্যবসায়ী সমিতি নির্বাচন।
ব্যবসা সমিতি নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। শনিবার খেপুপাড়া মহিলা কলেজ অফিস কক্ষে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ব্যবসায়ী সমিতির ভোট গ্রহণ চলবে। মোট ভোটার সংখ্যা ১২৫৭। ১২টি পদের মধ্যে ৮টি পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ৪ টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এখন ৮টি পদে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
এ ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ৪ টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন সহ-সভাপতি শাহ আলম খাঁন, প্রচার সম্পাদক পদে তৈয়ুবুর রহমান, নির্বাহী সদস্য মোনাসেফ খাঁন ও মো. আক্তার হোসেন।
এ নির্বাচনে সভাপতি পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তারা হলেন সাবেক সম্পাদক ফিরোজ শিকদার (ছাতা) এবং নাজমুল ইসলাম (আনারস), সিনিয়র সভাপতি পদে সাবেক কাউন্সিলর জাকির শিকদার (গরুর গাড়ী) এবং বিল্লাল খাঁন কাবুল (উড়োজাহাজ), সাধারন সম্পাদক পদে সৈয়দ মো. রাসেল (তালাচাবি) ও আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম (দোয়াত কলম), যুগ্ন সম্পাদক পদে রেহান উদ্দির রেহান (কলস) ও খাইরুল আমিন (রিকসা), সাংগঠনিক ৩ জন তারা হলেন সার্জেন্ট অব. নুরমোহাম্মদ (আম)-মাহমুদুল হাসান সুমন (মোরগ)-সুমন মল্লিক (ইলিশ মাছ), অর্থ সম্পাদক ২ জন তারা হলেন নুর জামাল খালাসি (ঘোড়া) ও সালাম বিশ্বাস (সিলিংফ্যান), ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রহিমুর রহমান হিরু (ফুটবল) ও ফরিদ উদ্দিন (ক্রিকেট ব্যাট)এবং দপ্তর সম্পাদক পদে বি এম খালেক (আপেল) ও শওকত হোসেন সবুজ মৃধা (হরিন)।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাপাড়া বাণিজ্যিক পৌর এলাকায় ব্যানার, পোস্টার আর ফেষ্টুনে ছেয়ে গেছে। নির্বাচন ঘিরে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝেও দেখা দিয়েছে খুশির আমেজ। পুরো বাজার ঘিরে পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে, প্রচার প্রচারণায় মুখর প্রার্থীরা। কথার বুলি আর নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া সামাজিক গনমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে প্রচারনা এবং সেই সাথে চলছে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা সংবলিত বিভিন্ন মন্তব্য। ইতোমধ্যে ভোটারেরাও শুরু করেছেন প্রার্থীদের চুলচেরা বিচার বিশ্লেষন। যাকে ভোট দিলে ব্যবসায়ী সমিতি উন্নয়ন হবে-এমন ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করার পক্ষে বেশির ভাগ ভোটার অভিমত প্রকাশ করেছেন। সকল জল্পনা কল্পনা শেষে নানা চড়াই উতড়াই পেরিয়ে একটি সুষ্ঠু ও ব্যবসায়ী বান্ধব কমিটি উপহার দিতে পারবেন তাকেই ভোটারা পবিত্র ভোট দিবেন।
ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড এর মাধ্যমে হাজার ব্যবসায়ী আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ ব্যবসা সমিতির কলাপাড়া অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে অধিকাংশ সদস্যই অভিযোগ করেছেন যারা ব্যবসার সাথে জড়িত নয় তাদেরকেও সদস্য করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
অনামিকা বিজনেস সেন্টারের মালিক দেবাশীষ মুর্খাজী (টিংকু) বলেন, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ ভোট আমরা ব্যবসায়ীকরা চাই। কিন্তু এক জন ব্যবসায়ীকের পরিচয় তার ট্রেডলাইসেন্স। ট্রেডলাইসেন্স বিহীন কিভাবে ভোটার হয়, কোন আইনে। কিভাবে প্রার্থী হয় তা আমার জানা নেই বলে তিনি প্রতিবেদকে জানান। আশা করি যারা নিবাচিত হবেন তারা ব্যবসায়ীদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবেন।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, একটি নির্বাচনে ইশতেহার থাকাটা জরুরী। ইশতেহার ছাড়া একটি সংগঠন কিংবা সদস্যদের উন্নয়নে শুভংকরের ফাঁকি থাকার সম্ভাবনা থাকে। নির্বাচনে ইশতেহার না থাকলে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কোন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা থাকে না। নিজেদের ইচ্ছেমত সংগঠন পরিচালনা করার চেষ্টা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে। যা পরবর্তীতে সমিতি ও সদস্যদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমরা ব্যবসায়ীরা চাই নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের ইশতেহার ঘোষণা করুক। এটি আমাদের দাবি। তবে ভোটাররা বলছেন, সৎ, যোগ্য ও নেতৃত্বের গুণাবলী এবং দুঃসময়ে যাকে কাছে পাবেন তাকেই নির্বাচিত করতে চান।
সভাপতি প্রার্থী আনারস প্রতিকের নাজমুল ইসলাম বলেন,শালিস বানিজ্য, কোন অন্যায় প্রশ্রয় দেবেন না। ব্যবসায়ীদের বিগত দিনে যারা বিভিন্ন পদে ছিল তাদের ওপর কোন আস্থা নেই।
সভাপতি পদে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী ফিরোজ শিকদার বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির সংগঠনের সকল ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা দিবো ও মাদক মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবো।
কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সংগঠনের নির্বাচন পরিচালনাকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষ বশির উদ্দিন জানান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়া হবে। তারা আমাকে আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর দায়িত্ব দিয়েছে।