রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বাজারের মধ্যে যাতায়াতের ব্রিজটির কাজ শেষ হলেও দুই প্রান্তে মাটি ভরাটের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। ফলে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ জনগণের কোনো কাজে আসছে না।
দীর্ঘদিন ধরে কাঠের সাঁকো দিয়ে পার হতে হচ্ছে জনগণকে। এতে প্রায়ই ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। বর্ষা মৌসুমে এ কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ব্রিজের দুই প্রান্তে মাটি ভরাট কাজ শেষ করে ব্রিজটি জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বাজার সংলগ্ন এ ব্রিজটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত এর কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি।
এ ব্রিজটি দিয়ে ধামুরা বাজার, সরাকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ধামুরা ডিগ্রী কলেজ সহ, হারতা, শাতলা, জল্লা, ওটরা ইউনিয়নের সহ প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন।
তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়সহ বিভিন্ন কাজে জেলা ও উপজেলা শহরে দিয়ে ধামুরা বাজার ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ এ ব্রিজের দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কের মাটি ভরাট কাজ অসমাপ্ত থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে। অথচ ঠিকাদারের গাফলতির জাঁতাকলে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
দৃশ্যমান একটি ব্রিজ থাকলেও তার সুফল ভোগ করতে পারছেন না কেউ। ধামুরা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন বলেন, সেতু নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায কাঠের মই দিয়ে পার হচ্ছি। নদীর উভয় পাশের লোকজন মই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছেন। ব্রিজটির সংযোগ সড়ক কবে নাগাদ নির্মাণ হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ধামুরা বাজারে ব্যবসায়ী কুদ্দুস ফকির জানান, সেতুতে উঠতে গিয়ে একাধিকবার দুর্ঘটনায় পড়তে হয়েছে। সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে কয়েকজন আহতও হয়েছে। সেতুটি এখন যেন মরণ ফাঁদ। ধামুরা বাজার ব্যবসায়ি জসিম খলিফা বলেন, ব্রিজটির সংযোগ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিনিয়ত এখানে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।
নদীর ওপারে ক্লিনিক থাকায় জরুরি রোগী পারাপারে অনেক বেগ পোহাতে হয়। ইউপি সদস্য ছান্টু মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ব্রিজের দুই প্রান্তে কাঠের সাঁকো সংযুক্ত করে কোনোরকমে চলাচলের ব্যবস্থা করে হয়েছে ।
তবে জনগণের স্বার্থে ব্রিজটির সংযোগ স্থলের মাটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি। শোলক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা.আব্দুল হালিম বলেন, সেতু নিয়ে জনদুর্ভোগের বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা পর্যায়ের সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। কোন কাজ হচ্ছে না।
ঠিকাদার একদিন কাজ করে তিন মাস কাজ করে না। তবে সংযোগ সড়কটি দ্রুত নির্মাণ করা জরুরি। প্রকল্পের ঠিকাদার মেসার্স আমির কনস্ট্রাকশন আমির হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তিনি ফোন রিসিফ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন, কাজটি ফেলে রাখায় আমরাও বিপাকে আছি। এলাকার লোকজন ভোগান্তিতে পড়ছেন। ঠিকাদারকে আমরা একাধিকবার বলেছি তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।