সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ক্ষেতের ধান বিনষ্ট করা সন্দেহের বসে বৃদ্ধ স্বামী ও বৃদ্ধা স্ত্রীসহ মেয়েকে অমানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ২নং টিয়াখালী ইউপির সাতকানি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বর্তমানে দরিদ্র ওই পরিবারটি হাসপাতালের শয্যায় শরীরে ব্যাথা নিয়ে অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। অর্থসঙ্কটে হচ্ছে না চিকিৎসাও। এদিকে ওই পরিবারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাদের ফাঁকা বাড়িতে গোয়াল ঘরে ঢুকে প্রতিপক্ষরা একটি গাভিন গরুকে হত্যা করে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। মঙ্গলবার সকালে টিয়াখালী ইউপির সাতকানী গ্রামে ভুক্তভোগীদের গোয়াল ঘরের সামনে গরুর মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা।
জানা গেছে, গত রোবাবার সন্ধ্যায় ওই গ্রামে একটি ধান ক্ষেতে সন্দেহের বসে তাদের নির্যাতন করা হয়। ভুক্তভোগী আলতাফ গাজী (৬৮), তার স্ত্রী চন্দ্রভানু (৫৯) এবং কন্যা রাবেয়া (৩৫) এখনো কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত আলতাফ গাজী জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মাঠ থেকে গরু নিয়ে ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। এসময় একই গ্রামের সালাম গাজী তার ধান ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে আইল তৈরি করে (স্থানীয় ভাষায়) চলাচলের মাধ্যমে ফসল বিনষ্টের অভিযোগ করেন। কিন্তু আলতাফ গাজী চলাচলের যায়গা তৈরি করেননি বলে জানালেও ক্ষিপ্ত হন সালাম। পরে বৃদ্ধ আলতাফের স্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতিবাদ করলে তাকে বেধরক পিটুনি দেন সালাম ও তার ছেলে রুবেল। এসময় বৃদ্ধা স্ত্রীকে নির্যাতনে বাঁধা দিলে তাকেও নির্যাতন শুরু করেন তারা। এদিকে বাবা মায়ের চিৎকার শুনে তাদের বাঁচাতে মেয়ে রাবেয়া এগিয়ে গেলে তাকেও পিটুনি দেয় নির্যাতনকারিরা। পরে স্থানীয়রা গিয়ে সঙ্গাহিন অবস্থায় একই পরিবারের তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশারেফ গাজী জানান, ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে চলাচলের যায়গা তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু তার কাছে জিজ্ঞেসা না করেই সন্দেহের বসে স্বামী স্ত্রী এবং মেয়েকে অমানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। একই গ্রামের প্রাক্তন শিক্ষক মোশারেফ মুন্সি বলেন, নির্দোষ বয়ষ্ক দুজন মানুষকে সন্দেহের বসে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারটির গোয়ালে ঢুকে প্রতিপক্ষরা গরু হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
এবিষয়ে জানতে সালাম গাজীর বাড়িতে গিয়ে তাকে পওয়া যায়নি। তবে স্ত্রী লিলি বেগম জানান, আমার পরিবারের কেউ গরু হত্যা করেনি। কিন্তু তার ছেলে রুবেল একটু ভুল করেছে ।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।