বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণ, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
কয়েকজন অভিভাবক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০২ নম্বর বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে কোনো পুরুষ শিক্ষক নেই। ১৩ জন নারী শিক্ষক বিদ্যালয়টিতে পাঠদান করছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসেন না। ৫-৬ জন আবার বাচ্চাদের সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। তারা ক্লাসে পাঠদান কিংবা ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি মনোযোগি নন। বেশিভাগ সময় নিজের বাচ্চাদের লালন-পালনে ব্যস্ত থাকেন। এতে বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় বিঘ্ন ঘটে।
অনেক সময় দেখা যায়, ক্লাসে পাঠদান না করে অধিকাংশ শিক্ষক অফিস কক্ষে গল্প করে সময় কাটান। কোনো অভিভাবক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয়ে গেলে তাদেরকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়।
এছাড়াও অভিভাবকরা সন্তানের লেখাপড়ার খোঁজ-খবর নিতে বিদ্যালয়ে গেলে অনেক সময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (টিসি) দেওয়ার হুমকিও দেয়া হয়।
লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যারা শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইশরাত জাহান তার বাসায় ও বিদ্যালয়ের কক্ষে নিয়মিত প্রাইভেট পড়ান। প্রতিটি ক্লাসের জন্য সময় ৪৫ মিনিট নির্ধারিত থাকলেও মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই শিক্ষকরা ক্লাস শেষ করেন। বিদ্যালয় থেকে কোনো প্রত্যয়নপত্র আনতে গেলে ৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
বিদ্যালয়ের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কোনো অভিভাবক প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক সারাহ পারভীন রিংকুসহ কতিপয় শিক্ষকরা বলেন, ‘আমরা সরকারের চাকরি করি। আমরা অভিভাবকদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নই।
অভিযোগকারীরা বিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে ও বিদ্যালয়ে অন্তত ৬-৭ জন পুরুষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
মো. মাহবুবুর রহমান কামরুল নামে একজন অভিযোগকারী অভিভাবক বলেন, এসব বিষয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. রুহুল আমিনকে অবহিত করলেও তিনি রহস্যজনক কারণে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সারাহ পারভীন রিংকু বলেন, তার ও অন্যান্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।