সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন
বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও নৈরাজের অভিযোগতুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সঞ্জয় চন্দ্র সামের এক আওয়ামী লীগ নেতা। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি পঙ্কজ নাথের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য, দুর্নীতি, দখল সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজী, জমি দখল এবং অবৈধভাবে অর্থ সম্পদ অর্জনসহ ১৬টি অভিযোগ তুলে ধরেন। সোমবার (০৪ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের সদর রোডস্থ একটি অভিজাত রেস্তোরায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বিদ্যানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাজিরহাট থানা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘এমপি পঙ্কজ নাথ নিজের নির্বাচনী এলাকায় অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসছেন। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলছেন তাদের হামলা-মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। আমিও তার সন্ত্রাসী, হামলা-মামলা এবং নৈরাজ্যের শিকার। তিনি বলেন, ‘ভূয়া ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ৯টি কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়। যার মধ্যে ভূয়া ঠিকানা দিয়ে চাকরী নেয় এমপি’র ভাইয়ের স্ত্রী। এই অবৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে পঙ্কজ নাথ এর ভাইয়ের স্ত্রী কল্যানি দেবনাথ ও বিদ্যানন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মিয়াসহ ৪১ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ দুর্নীতি দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং ৩৮১। যে মামলার তদন্ত এখনও চলছে। এদিকে মামলায় করায়, ক্ষিপ্ত এমপি পঙ্কজ নাথ ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল পঙ্কজ নাথ তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার দুটি পা, একটি হাত হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পঙ্গু করে দেয়। এর পরে আমার বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণকরে। ওই মামলায় আমি ১৮ দিন কারাবন্দি ছিলাম। এতেই খ্যান্ত হননি তিনি। ২০১৮ সালের ১২ জুন মেহেন্দিগঞ্জ নতুন ডাকবাংলোর ভিআইপি ১ নম্বর কক্ষে নিয়ে মেরে মৃত ভেবে নদীতে ফেলে দেয়। এছাড়া লিখিত বক্তব্যে সঞ্জয় চন্দ্র ১৭ টি পয়েন্টে বিভিন্ন অভিযোগের কথা তুলে ধরেবলেন, পঙ্কজ নাথ ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, টেন্ডারবাজী, গোডাউন সিন্ডিকেট, জেলা পরিষদের ঘাট দলখ করা এবং বিপুল অর্ধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে এমপি পঙ্কজ নাথ বলেন, গত ৬ বছর ধরে এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বহুবা সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। যা একটি বিশেষ মহলের ইন্দোনে করানো হচ্ছে। যাকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করাচ্ছে, সে কিভাবে রেস্তোরা ভাড়া নিলো, কোথায় টাকা পেলো এগুলোও খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি বলেন, অভিযোগে যে বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, সেটা তো শিক্ষা মন্ত্রনালয় দেয়। আর কারো যোগ্যতা ছাড়া তা দেয়া যেতে পারে না। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে মেহেন্দিগঞ্জের কোন ঘাটে ক্ষেত মজুর বা চাষীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়। আমার জানামতে মেহেন্দিগঞ্জের কোন ঘাটে কাউকে টাকা দিতে হয় না। আবার বালুমহল ও টেন্ডারবাজির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তাও বলতে হবে কিভাবে। কারন জেলার সবকিছুই বরিশাল শহর থেকে হয়, সেক্ষেত্রে সেখানে আমি কিভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি। আর সম্পদ, তা তো যে কারোরই থাকতে পারে। তবে দেখতে হবে আমার যেটা আছে সেটা আইনসিদ্ধ কিনা, বৈধ কিনা, আয়ের বিনিয়োগটা সাদা কিনা। আর আমি যে আয়কর দেই সেখানে উল্লেখিত হিসাবের সাথে সবকিছু ঠিকআছে কিনা। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি মহল বিশেষ বিশেষ সময়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। শুধু সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই এ মিথ্যাচার। আমি আপার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সাথে কথা বলবো, তাকে বিষয়টি জানাবো। তিনি যদি বলেন তাহলে আইনগত ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহন করবো।