রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
দীর্ঘ ছয় মাস পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগের খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত।
রোববার (৩ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬ এর ধারা ১০ (১) অনুসারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিনকে (আরেফিন মাতিন) চার বছরের জন্য এ নিয়োগ দেওয়া হয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিঞা জানান, সংকটময় মুহূর্তে উপাচার্য নিয়োগ না হলে আরও বড় ধরনের সমস্যায় পড়তো বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও সহকারী রেজিস্টার বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, বিষয়টি ইতিবাচক। অভিভাবকহীনতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। উপাচার্য নিয়োগের পর সেই সংকট নিরসন হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফ্লোরা মণ্ডল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় তাদের অনেক পরীক্ষা আটকে ছিল। পাশাপাশি শিক্ষক সংকটেরও সমাধান ছিল না।
এর আগে, উপাচার্য না থাকায় গত ১৮ ও ১৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা সাময়িক স্থগিত করা হয়। উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের টানা ৩৪ দিন আন্দোলনের কারণে ক্যাম্পাসে না এসে ঢাকার লিয়াজো অফিস থেকেই বিদায় নেন ভিসি ইমামুল হক।
গত ২৭ মে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যায়ের ট্রেজার উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার মেয়াদও গত অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষ হয়। এ কারণে সংকটের মুখে পরে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
এদিকে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য ছাদেকুল আরেফিন বিগত দিনে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪ সালে ছিলেন রাবির সিনেট সদস্য ও ২০১৩ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দাযি়ত্ব পালন করছেন। এর আগেও তিনি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়াও একাধিক দাযি়ত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও ১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সদস্য ছিলেন। ২০০৪ সালে ছিলেন শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ এবং ২০১১ সালে সংগঠনটির মহাসচিব নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে তিনি রাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক ও ২০১১ সালে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে রাবির নির্বাচিত একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সালে রাবির সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উপাচার্য ছাদেকুলের বর্তমানে ১৮টি প্রকাশনাসহ একটি বই বের হয়েছে এবং তার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন পিএইচডি ডিগ্রি চারজন শিক্ষার্থী। এছাড়াও বর্তমানে তিন জন শিক্ষার্থীর পিএচইডি ডিগ্রির সুপারভাইজারের দাযি়ত্বে রয়েছেন। তিনি ১৯৮৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগ থেকে অনার্স এবং ১৯৮৫ সালে মাস্টার্স পাস করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ থেকে ১৯৯৩ সালে এমফিল ও একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০০৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন ড. ছাদেকুল আরেফিন।