শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্ত্রী ধর্ষনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদীকে (স্বামী) পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। ধর্ষন মামলার আসামী করায় তার এই পরিনতি বলে দাবী পরিবারের। গুরুতর অবস্থায় বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাকে ভর্র্তি করা হয়েছে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনায় দৃস্টান্তমূলক বিচার দাবী করেছেন স্বজনরা। এরআগে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম চাপলী গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা। আহতের নাম মো. সিদ্দিক হাওলাদার (৩৫)। আহত ছিদ্দিক অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাত আনুমনিক সাড়ে ৮টার দিকে কলাপাড়া উপজেলা ধুলশ্বর বাজারের ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি চায়ের দোকানে দাড়ায়। এসময় তার স্ত্রী গণধর্ষনের ঘটনায় জড়িত মামলার আসামীরা তাকে লোহার রড দিয়ে পেটানো শুরু করে মাটিয়ে ফেলে দেয়। মাটিতে ফেলে আসামীরা ছিদ্দিকের পায়ে মারাত্মক ভাবে আঘাত করে। পরে স্থানীয় রুবেল নামে এক দোকানি মটর সাইকেল ভাড়া করে ছিদ্দিককে বাড়ী পৌছে দেয়। ছিদ্দিকের চাচাতো ভাই কবির জানায়,চাপলি বাজারে চিকিৎসা না পেয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে সন্ত্রাসীদের বাধার মূখে পরে চিকিৎসা নিতে পারেনি তারা। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আমতলি এসে প্রাথমিক ভাবে আঘাত প্রাপ্ত দুই পা ব্যান্ডেস করে রক্তক্ষরন বন্ধ করেন এবং বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলা শিকার ছিদ্দিকের ভাই কবির আরো জানায়, চলতি বছরের গত ১৫ এপ্রিল রাতে জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধুলাশ্বর ইউনিয়নের নতুনপাড়ায় স্বামী ছিদ্দিককে মারধর করে তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষন করেন। ঘটনায় ১৬ এপ্রিল ধর্ষিতার স্বামী ছিদ্দিক বাদী হয়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযাগে দায়ের করেন। মামলায় একই এলাকার মৃত মনু মাঝির ছেলে শাহ আলম, মনির হাওলাদারের ছেলে শাহিন, রবিউল, আল-আমিন, আব্দুর রশিদ, শাকিলসহ বেশ কয়েকজনকে আসামী করা হয়। এ মামলায় কয়েক আসামী জেলে গেলেও মামলার বাদী ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করে ধর্ষন মামলার আসামীরা। ধর্ষনের মামলা উঠিয়ে নিতে একাধিকবার হুমকী দেয়া হয় বাদীকে। বেশ কয়েকবার বাদীর বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায় তারা। পরে জেল থেকে কিছু দিন আগে আসামীরা জামিনে বের হয় এবং মঙ্গলবার রাতে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ জানান, ঘটনা শুনে আমি আহত ব্যক্তিকে বরিশাল যাওয়া জন্য সকল ব্যবস্থা প্রদান করা হয়েছে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এদিকে শেরে-ই বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, আহতের শরীরের বিভিন্ন ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। পরীক্ষার-নীরিক্ষার পর তার শারীরিক অবস্থা জানা যাবে। তবে তার যথাযথ চিকিৎসা চলছে।