বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩১ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: শিক্ষক-কর্মচারী সংকটসহ নানা সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বরগুনা সরকারি কলেজ। শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
কলেজটিতে ৪৭ জন শিক্ষকের জায়গায় আছেন মাত্র ২৩ জন। এরমধ্যে তিনটি বিভাগ একদম শিক্ষকশূন্য। চলছে ১০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান।
মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। দুই একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে অন্য বিভাগগুলো। তারপরও প্রতিমাসে চাহিদাপত্র দিলেও পদায়ন হচ্ছে না নতুন শিক্ষক।
গত চার বছর ধরে একজন শিক্ষকও নেই বরগুনা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে। এ কারণে খণ্ডকালীন শিক্ষকের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে এ বিভাগের পাঠদান। একই অবস্থা ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও অর্থনীতি বিভাগের।
এছাড়াও কয়েকটি বিভাগ চলছে একজন মাত্র শিক্ষক দিয়ে। কোনো বিভাগেই নেই প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষক। এ কারণে মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে পাঠদান।
শিক্ষক সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন কলেজটিতে কর্মরত শিক্ষকরাও। এ কারণে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে জেলার সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠের ১০ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান।
মো. ঈমান নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ব্যবস্থাপনা বিভাগে একজনও শিক্ষক নেই। এই কারণে প্রায় এক হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়ে খুবই বিপদে আছি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইম ফরাজী বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে কলেজে ক্লাস কম হচ্ছে। এজন্য কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থী মারজিয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, কলেজে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে কোনো শিক্ষক নেই। এ কারণে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা কিছুই পড়তে পারতেছি না। এ বিভাগে কোনো ক্লাস হচ্ছে না।
শিক্ষকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ছাত্র-অভিভাবকরা আন্দোলন, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েও এর কোনো প্রতিকার পাননি। সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
মারুফ আক্তার নামে এক শিক্ষার্থীর বাবা মো. রশিদ ফরাজী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, শুধুমাত্র শিক্ষক ও কর্মচারী সংকটের কারণে বেহালদশা বরগুনা সরকারি কলেজের।
রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান জাহাঙ্গীর কবির বলেন, শিক্ষক প্রয়োজন কমপক্ষে চারজন। আমরা অনেক ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। যাতে এই বিভাগে শিক্ষক দেওয়া হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ শাহ আলম বলেন, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যদি একজনও শিক্ষক না থাকে তাহলে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হবে এটাই স্বাভাবিক।
দীর্ঘদিন ধরে প্রতিমাসে শূন্য পদের অনুকূলে শিক্ষক পদায়নের চাহিদাপত্র দিলেও পদায়ন হচ্ছে না শিক্ষক। তাই দ্রুত পর্যাপ্ত শিক্ষক পদায়নের দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের।
বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান জানান, এ ব্যাপারে সরকার যদি একটু আন্তরিক হন তাহলে দক্ষিণ বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষক সংকট নিরসন হবে।
বরগুনা সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রিসহ অনার্সে ৮টি ও মাস্টার্সের ৭টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়।