সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের বাড়িতে সরকারি বরিশাল কলেজটি প্রতিষ্ঠিত বলে দাবী সুধীজন ও ইতিহাসবিদদের। বিভিন্ন সময়ে অশ্বিনী কুমারের নামে কলেজটি নামকরণের দাবি ওঠে, কিছুদিন পরে আবার তা থেমেওে যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের সংসদ সদস্য ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস জাতীয় সংসদে সরকারি বরিশাল কলেজকে ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ’ নামকরণের প্রস্তাব করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বরিশালের জেলা প্রশাসক গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সরকারি বরিশাল কলেজকে ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ’ নামকরণের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।
একাধিক সূত্রমতে, মেয়র ও ডিসির বিরোধিতায় ঘি ঢেলেছেন মেয়রের কতিপয় পরামর্শদাতা।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ২৯ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডকে সরকারি বরিশাল কলেজকে ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ’ নামকরণের যৌক্তিকতা উল্লেখ করে সুপারিশ পাঠাতে বলা হয়েছে। সুপারিশের প্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আন্দোলনকারী নেতারা বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে নাম পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থা না নেওয়ার জন্য বলেন। একই দাবিতে তারা তার কাছে একটি স্মরকলিপি দেন। এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কলেজের নাম পরিবর্তন না করার জন্যও স্মারকলিপিও দিয়েছেন। অথচ যারা আজ এই দাবির পক্ষে নেমেছেন, তারাই কিন্তু একদিন অশ্বিনী কুমারের নামে নাম পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থাৎ ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সাংসদ অ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস জাতীয় সংসদেও বরিশালবাসীর পক্ষে অশ্বিনী কুমারের নামে কলেজের নাম পরিবর্তনের দাবি তোলেন।
জানা যায়, ১৯২৩ সালে অশ্বিনী কুমার দত্তের মৃত্যু হয়। ১৯৫৫ সালে তাঁর একমাত্র ভাতিজা সরল দত্ত দেশত্যাগ করলে অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনটি বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ‘অশ্বিনী কুমার কসমোপলিটন (সব ধর্মের ছাত্রদের জন্য) ছাত্রাবাস’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ১৯৬২ সালে কয়েকজন শিক্ষানুরাগীর সহযোগিতায় অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয় নৈশ কলেজ। স্বাধীনতার পরে কলেজটি অশ্বিনী কুমারের নামে করার দাবি উঠলেও নামকরণ করা হয় বরিশাল কলেজ নামে।
বরিশালের প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক এসএম ইকবাল জানান, ১৯২৩ সালে অশ্বিনী কুমার দত্তের মৃত্যু হয়। ১৯৫৫ সালে অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনটি বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ‘অশ্বিনী কুমার কসমোপলিটন ছাত্রাবাস’ হিসেবে পরিচিতি পায়। এই ছাত্রাবাসে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদসহ বর্তমানের অনেক আওয়ামী লীগ নেতারা এখানে ছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। ১৯৬২ সালে এখানে গড়ে তোলা হয় বরিশাল নৈশ কলেজ। স্বাধীনতার পর কলেজটি অশ্বিনী কুমারের নামে নামকরণের দাবি উঠলেও সে দাবি পূরণ হয়নি। অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে বর্তমান সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে তাঁর নামে করলে এমন কোন ক্ষতি নেই। এই দাবির পক্ষে বরিশালের সর্বস্তরের মানুষ ছিল। এখন যারা আন্দোলনে নেমেছে তাদের মধ্যে অনেকেই অশি^নী কুমারের নামে নামকরণের পক্ষেই ছিলেন। কি কারণে তারা এর বিরোধিতা করছেন জানি না। সবাই মিলে উদ্যোগ নিয়ে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করা উচিত।
সূত্র: দৈনিক শিক্ষা।