শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কুয়াকাটায় ২দিন ব্যাপী শিক্ষক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত বরিশালে নারীপক্ষের আয়োজনে তরুণ প্রজন্মের সফলতার গল্প শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে জেলা প্রশাসকের শুভ আগমন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা বাউফলে জেলেদের মাঝে (বিজিএফ) এর চাল বিতরণে অনিয়ম স্বল্পমূলে তৈরিকৃত ১৯২ জন জেলেদের মাঝে লাইফবয়া বিতরণ পটুয়াখালী র‍্যাব ক্যাম্পে,ঘুমন্ত অবস্থায়  র‍্যাব সদস্যর মৃ/ত্যু কলাপাড়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে ইউএনও’র মত বিনিময় বাউফলে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ স্কুল শিক্ষকসহ আহত-৩ মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫ কলাপাড়ায় বৌদ্ধবিহার গুলোতে উদযাপিত হচ্ছে প্রবারনা পূর্ণিমা কুয়াকাটা সৈকত থেকে অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত ম/র/দে/হ উদ্ধার মহিপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের টিন ও নগদ টাকা প্রদান সাংবাদিকদের সাথে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় বাউফলে এক গৃহবধূর গর্ভে এক সঙ্গে পাঁচ নবজাতকের জন্ম পটুয়াখালীর গলাচিপায় র‍্যাবের বিশেষ অভিযানে ১২শ কেজী পলিথিন জব্দ,
বরগুনায় প্রকাশ্যে পিটিয়ে কিশোর হত্যা!

বরগুনায় প্রকাশ্যে পিটিয়ে কিশোর হত্যা!

Sharing is caring!

বরগুনায় ঈদের দিন বিকেলে পায়রা নদীর পাড়ে গোলবুনিয়া বল্ক ইয়াডে ঘুরতে গেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয় হৃদয় নামের এক কিশোরকে। প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন বিকেলে পায়রা নদীর পাড়ের ব্লক ইয়ার্ডে শতশত তরুণ-তরুণী ঘুরতে যায়। ওইদিন বিকেলে হৃদয়ও তার বেশ কয়েকজন বন্ধু নিয়ে গোলবুনিয়া ব্লক ইয়ারডে ঘুরতে যায়। এসময় হৃদয়ের এক বান্ধবীর সাথে দেখা হলে তার সাথে কথা বলে হৃদয়। তখন হৃদয় এবং তার বান্ধবীকে নিয়ে স্থানীয় নয়ন ও তার সহযোগীরা বাজে মন্তব্য করায় এর প্রতিবাদ করে হৃদয়। এর কিছুক্ষণ পরেই উত্যক্তকারী নয়ন, হেলাল, আবীর, তনিক এবং নোমানসহ তাদের সহযোগীরা লাঠিসোটা নিয়ে হৃদয়ের উপর হামলা চালায়। এসময় হৃদয় দৌঁড়ে বাঁচতে চাইলেও তাকে তাড়া করে তাকে পেটাতে থাকে নয়ন, হেলাল, এবং নোমানসহ তাদের সহযোগীরা। এক পর্যায়ে লাঠির প্রচন্ড আঘাতে ঢলে পড়ে হৃদয়।

এরপর সাথে সাথে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরগুনা সদর হাসপাতালে আনা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বরিশাল শেরই বাংলা হাসপাতালে আজ সকালে হৃদয়ের মৃত্যু হয়। হুদয় এ বছর টেক্সটাইল ভোকেশনাল স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছে। সে তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। তার বাবা দরিদ্র দেলোয়ার হোসেন একজন রিকশাচালক। তারা বরগুনার চরকলোনি এলাকার চাঁদশী সড়কের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, গোলবুনিয়া ব্লক ইয়ার্ডে শহর থেকে তরুণ-তরুনীরা ঘুরতে গেলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিক কাজিসহ তার ভাই কনু কাজির ছেলে নোমান, স্থানীয় আলতাফ মৃধার ছেলে হেলাল, লিটন হাওলাদারের ছেলে নয়নসহ আবীর এবং তনিক ও তাদের সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে অনেক অপিরিচত ছেলেমেয়েদের অপমান করতো। এরই ধারাবাহিকতায় হৃদয় হত্যার ঘটনা ঘটে বলেও তিনি জানান।

হৃদয়ের বন্ধু মিঠুন রায় জানায়, হৃদয়সহ তারা সাতজন বন্ধু ঈদের দিন বিকেলে পায়রা নদীর পাড়ে গোলবুনিয়া ব্লোক ইয়ারডে ঘুরতে যায়। এসময় হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের এক বান্ধবীর দেখা হয়। এসময় হৃদয় তার ওই বান্ধবীর সাথে কথা বলতে থাকে। সেসময় নয়ন, হেলাল এবং নোমানসহ তাদের সহযোগীরা তাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করতে থাকে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করার কিছুক্ষণ পরেই তারা ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল লাঠিসোটা নিয়ে হৃদয়ের উপর আঘাত হানতে থাকে। এসময় হৃদয়ের বন্ধুরা বাঁধা দিতে গেলে তাদের উপরেও হামলা চালায় ওই সন্ত্রাসীবাহিনী। এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হৃদয়কে ফেলে পালিয়ে যায় তাঁরা।

হৃদয়ের অপর এক বন্ধু ফেরদৌস মোল্লা জানান, হামলাকারীদের সবাইকে আমরা চিনি না। তবে অনেক বয়স্ক লোকজনকেও এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিতে দেখা গেছে। ফেরদৌস মোল্লা আরও জানায়, হৃদয় অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা একটি অটো রিকশায় করে তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মোবাইলফোনে কথা বললে হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম জানান, হৃদয় তাদের একমাত্র ছেলে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে এখন তারা কী নিয়ে বাঁচবেন বলে আহাজারি করছিলেন তিনি। এসময় তিনি আরও বলেন তাঁর বাবার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় হৃদয়ের হত্যাকারীদের মধ্যে আলতাফ মৃধার ছেলে হেলাল মৃধাদের সাথে তাদের আগে থেকেই বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই হেলালের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্তের পর হৃদয়ের মরদেহ বরগুনা নিয়ে আসা হবে। হৃদয়ের বাবা-মা এখনও বরগুনায় ফিরে না আসায় এ ঘটনায এখনও কোনও মামলা হয়নি।

তবে বরগুনা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) আবীর মোহাম্মদ হোসেন জানান, অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

এর আগে গত বছরের জুনে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নেয়াজ রিফাত শরীফ নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এক বছর পরেই বরগুনায় ফের সঙ্ঘবদ্ধ হত্যার ঘটনা ঘটলো।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD