সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
নির্ধারিত ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হলেও করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনেই থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রামণে এখন সারা বিশ্বের যে অবস্থা এবং সারাদেশ এখন লকডাউনের মতো হয়ে গেছে, এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তো ১০০ শতাংশ তাকে (খালেদা জিয়া) কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সেখানে তিনি সেইফ আছেন। এখন তিনি সম্পূর্ণ হোম কোয়ারেন্টিন পরিবেশেই থাকবেন। আমরা আশা করি, এরমধ্যে (কোয়ারেন্টিন অবস্থায়) তিনি ভালো থাকবেন। যখন এ (করোনা ভাইরাস সংক্রামণ) পরিস্থিতির সমস্যাটা কমবে তখন আমরা পরবর্তী অবস্থার কথা চিন্তা করবো।
দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম যথেষ্ট অসুস্থ। এখনো ইনফ্যাক্ট ইম্প্রুভমেন্ট তার অসুখের খুব বেশি হয়নি। একটা মূল বিষয় ছিল যে, তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া আমাদের দাবিটা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা বলেছেন যে, দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না। দেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসা সেবার যে অবস্থা তাতে করে তো সব ডাক্তাররাও সার্ভিস দিতে পারছেন না। যতটুকু পারছেন তার যে ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আছেন তারা তাকে দেখেছেন এবং চিকিৎসা দিয়েছেন। আমরা আশা করি যে এরমধ্যে তিনি ভালো থাকবেন।
ডা. জোবাইদার তত্ত্বাবধায়নেই চিকিৎসা চলছে জানিয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের চিকিৎসার সবকিছু লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধায়ন করছেন। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) তার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ছয় মাস সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। সেদিন বিকেল ৫টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় আসেন।
ফিরোজার দোতলায় খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টিনে আছেন। সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন আছেন। এ ১৪ দিন কেউ নিচে নামেননি বলে জানান তার ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক।
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে ভোগছেন।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে নির্জন কারাবাস ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়ার কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। হাত-পায়ে আর্থারাইটিজের প্রচণ্ড ব্যথার কারণে তিনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। এ ব্যথা উপশমের ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
তার (খালেদা জিয়া) ডায়াবেটিক এখনো যথাযথ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ ও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।
ফিরোজায় গেটে পাহারারত নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, ম্যাডামের বাসায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসকের টিমের সদস্য ও কয়েকজন নিকট আত্মীয়-স্বজন আসছেন।