শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২৭ অপরাহ্ন
জয় বাংলার স্লোগানে বরিশালের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়েছিলো ১৯৭১ সালের এই দিনে (৮ ডিসেম্বর)। যেদিন পাক-হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিলো বরিশাল ও ঝালকাঠিসহ দক্ষিনের বেশ কিছু এলাকা।
আর ৮ ডিসেম্বর বরিশাল হানাদার মুক্ত হওয়ার এ দিবসটি স্মরনে করে মুক্তিযোদ্ধারা বরিশালে আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বরিশাল মহানগর ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে রোববার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় নগরের বগুরা রোডস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শেখ কুতুবউদ্দিন আহমেদ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ মোকলেছুর রহমান প্রমুখ।
এসময় মুক্তিযোদ্ধারা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে স্মৃতি বিজরিত দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন।
এদিকে বরিশাল মুক্ত দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে উপাচার্য বলেন, যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বরিশাল অঞ্চল পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল তাদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার তাঁদের এ আত্মত্যাগকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। আজকের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে, যাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সে চেতনাকে বুকে ধারন করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করবো এ হোক বরিশাল মুক্ত দিবসের অঙ্গীকার।
অপরদিকে বরিশালের পার্শবর্তী জেলা ঝালকাঠিও হানাদার মুক্ত হয় ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ এর এই দিনে বিজয়ের বেশে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করে। জেলার সর্বত্র আনন্দ উল্লাসে স্বাধীনতাকামী জনতা। ১৯৭১ এর ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাক হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহর দখলে নেয়। এরপর থেকে পাক বাহিনী রাজাকাদের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা জুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুট আর আগ্নিসংযোগসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন নিরীহ বাঙালীদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হত।
কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। পরের দিন ৮ ডিসেম্বর রাজাকাররা তরুণ মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করে। যেদিন গভীর রাত পর্যন্ত জয় বাংলার স্লোগানে মুখোরিত হয় ঝালকাঠির আকাশ বাতাস। একই দিন পাকহানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠির বর্তমান নলছিটি উপজেলা।